টাঙ্গাইল ধনবাড়ীতে ‘কিশোরীর পরিবারকে ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীকে’ বিয়ে করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

অপরাধ টাঙ্গাইল জেলা দেশ জুড়ে ধনবাড়ী

স্টাফ রিপোর্টার: জনপ্রতিনিধি যখন রক্ষই হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে তখন মানুষ কতটা নিরাপদ ? কিশোরী স্কুলছাত্রীকে বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা করবে তো দূরের কথা অথচ কিশোরীর পরিবারকে ফাঁদে ফেলে কিশোরীকে বিয়ে করেছেন এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান । তিনি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলী (৭৭) । তাঁর এ ন্যাক্কারজনক কর্মকান্ডে ‘টক অব দ্যা উপজেলায়’ পরিণত হয়েছে । এছাড়াও তিনি মুশুদ্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি । কিশোরীর হত দরিদ্র পরিবার অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিচার চেয়ে ধনবাড়ী থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । এমন অভিযোগটি দায়ের করেও বিপাকে পড়েছে কিশোরীর পরিবার ।

দায়ের করা লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী পরিবারের নিকট থেকে জানা যায়, নবম শ্রেণি স্কুল পড়ুয়া কিশোরী পরিবার ও অভিযুক্ত চেয়ারম্যান একই ইউনিয়নের বাসিন্দা । পরিবারটি হত দরিদ্র হওয়ার সুবাদে ওই বাড়িতে বিভিন্ন সহযোগিতার কথা বলে যাওয়া-আসা করতেন হযরত আলী । বিভিন্নভাবে প্রলোভনও দেখান । চেয়ারম্যানের সাথে পরিবারটির সম্পর্ক গভীর হলে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান চলাকালে কৌশলে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে যায় হযরত । এদিকে, ওই স্কুলছাত্রীকে এক সপ্তাহেও কোথাও খোঁজে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়ে ভুক্তভোগী পরিবার । ঘটনাটি এলাকাতে জানাজানি হলে হযরত আলীর বিচার চেয়ে স্কুলছাত্রীর পরিবার ২০ ফেব্রুয়ারি ধনবাড়ী থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘‘৭৭ বছর বয়স হয়েছে ঐ চেয়ারম্যানের সে কী ভাবে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ে করে ।এ

ঘটনাটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় । তাঁর প্রথম স্ত্রী রয়েছে । নাতি বয়সী কিশোরীকে বিয়ে করার ঘটনায় উপজেলায় আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে । এমন কান্ডে চেয়ারম্যানের বিচার  হওয়া দরকার । তাঁরা আরও জানান, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের মোটা উৎকোচে চেষ্টা চালাচ্ছিন তিনি ।’’

ওই কিশোরীর বাবা বলেন, ‘‘আমরা গরিব হওয়ায় সহযোগিতার কথা বলে হযরত আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত । তাকে সরল মনে বিশ্বাস করেছি । সে আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে জোর করে বিয়ে করেছে । অভিযোগ তুলে নিতে হুমকী দিচ্ছে ।’’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘‘চেয়রম্যান সাহেব ওই কিশোরীকে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বয়স বাড়িয়ে এফিডেন্ট করে বিয়ে করেছেন এমন খবর শুনেছি ।’’ অভিযুক্ত হযরত আলীর ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে রিসিভ করেননি ।

ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘‘লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । ওই কিশোরী স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *