স্টাফ রিপোর্টার: রাজনীতিতে আজ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা একে অপরের মুখ পর্যন্ত দেখেন না। ঠিক এ সময়ে একজন এমপি প্রার্থী যখন আরেক প্রার্থীকে সালাম করতে গেলেন, তখন তাকে বুকে টেনে জড়িয়ে ধরলেন। সেই সৌহার্দ্যময় ছবি ছড়িয়ে গেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মুগ্ধ হলো পুরো নির্বাচনী এলাকার মানুষ। এমন ঘটনা ঘটলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী আসনে।
এখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা মোজহারুল ইসলাম তালুকদার। আর স্বতন্ত্র হয়ে লড়ছেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। লতিফ সিদ্দিকী (৮৫) দীর্ঘদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন।
সে সময় থেকে আজো কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের ৩২ বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন মোজহারুল ইসলাম তালুকদার (৭৪)। সে সূত্র ধরে লতিফ সিদ্দিকী ও মোজহারুল ইসলাম তালুকদারের সম্পর্ককে নেতাকর্মী, গুরু শিষ্য কিংবা ভাই বলে জেনে আসছে সাধারণ মানুষ। তারা দুইজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে জেল জুলুম অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল।
দুপুরের দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার। সহকারী রিটার্নিং ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইনের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল করে বের হচ্ছেন। এ সময় তিনি দেখেন এক সারিতে চেয়ারে বসে আছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও তার সহধর্মিণী লায়লা সিদ্দিকীসহ আরো অনেকে। দেখামাত্রই মোজহারুল ইসলাম তালুকদার গিয়ে লতিফ সিদ্দিকীর পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন। সালাম শেষ হতে না হতেই লতিফ সিদ্দিকী মোজহারুল ইসলাম তালুকদারকে বুকে টেনে আলিঙ্গন করেন।
রাজনৈতিক ও সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক শংকর দাশ বলেন, ‘রাজনৈতিক ভুবনে আজকে মানবিকতা, ভদ্রতা ও সৌজন্যতা শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেখানে লতিফ সিদ্দিকী ও মোজহারুল ইসলাম তালুকদারের ঘটনাটি সত্যি আনন্দিত হওয়ার। এমনটা শুধু আমাদের দেশে নয় পুরো এশিয়া এবং বিশ্বে হওয়া উচিত। তবেই মানুষের কল্যাণ হবে, শান্তি আসবে।’
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে দীর্ঘদিন ধরে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এখানে মারামারি, হানাহানি, মামলা মোকদ্দমা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে এ ঘটনা স্বস্তির বাতাস বটে! সাধারণ মানুষ এটাই প্রত্যাশা করেন।