স্টাফ রিপোর্টার: চলতি বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারপরও মেধা যাচাইয়ের নামে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করেছেন টাঙ্গাইলের শিক্ষকরা ।শনিবার (৪নভেম্বর) ‘গোল্ড মেডেল বৃত্তি-২০২৩’ নামে এ পরীক্ষার আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখা।
সকালে জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় এ বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। এতে প্রায় আট হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ফরম পূরণ বাবদ শিক্ষার্থীপ্রতি নেওয়া হয়েছে দেড়শ টাকা।
নোট-গাইড আর কোচিংনির্ভর পড়াশোনা বন্ধ করতে এবং প্রতিদিন ক্লাসেই মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে গত ৮ আগস্ট সরকারিভাবে চলতি বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে সরকারি এ নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ‘গোল্ড মেডেল বৃত্তি’ নামে শিক্ষকরা ১০ লক্ষাধিক টাকা বাণিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃত্তি পরীক্ষা দিতে আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর)। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আবেদন ফি ১৫০ টাকা। পরীক্ষায় উপস্থিত আট শতাংশ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়ার কথা হয়েছে। জেলায় প্রথম স্থান অর্জনকারীকে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গোল্ড মেডেল ও সনদ এবং টেলেন্টপুল ও সাধারণ গ্রেড প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নগদ অর্থ, সনদ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হবে। পরীক্ষা শেষে তিন দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করার কথা রয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় উপজেলাভিত্তিক এ বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি গোল্ড মেডেল বৃত্তি পরীক্ষার সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বাসাইলের বার্থা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনির হোসেন খান বলেন, ‘এভাবে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করাটা আমাদের ঠিক হয়নি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ভুল আর হবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেলা থেকে পরীক্ষায় মোট কতজন অংশ নিয়েছে তা আমি নিশ্চিত নই। তবে আমার বাসাইল উপজেলায় ৮৮০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি টাঙ্গাইল জেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কামরুন্নাহার খান মুন্নি বলেন, সরকারি অনুমোদন ছাড়া সরকারি চাকরিজীবী শিক্ষকদের এ ধরনের অর্থ উত্তোলন ও বৃত্তি প্রদানের নামে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পূর্ণ বেআইনি।
বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার আনেহলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুনার রশিদ বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাইনি। শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এ আয়োজন করা হয়েছে।
দেড়ঘণ্টায় শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা তাদের একটু যাচাই করবো।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সহিনুর রহমান খান বলেন, শিক্ষক হয়ে তারা অনৈতিক কাজ করেছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।