মির্জাপুরে ৯ মাটি ব্যাবসায়ীকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা, ভেকু ও ট্রাক জব্দ

অপরাধ আইন আদালত টাঙ্গাইল জেলা মির্জাপুর

টিনিউজ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অবৈধ বালু-মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলমান রেখেছে উপজেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় রোবাবর (৪ ফেব্রুয়ারি) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছেন। এসময় ৯ জনকে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ড্রেজারের পাইপ ধ্বংস, একটি ড্রেজার, দুটি ভেকু মেশিন, একটি লোভেট, ছয়টি ভেকু ও ১১টি ডাম্পট্রাক জব্দ করা হয়।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বংশাই, লৌহজং ও ধলেশ্বরী নদীর শাখা এ উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত। এরমধ্যে বংশাই নদীর যোগীরকোফা-রশিদ দেওহাটা-কদিম দেওহাটা এবং গোড়াই মমিননগর মৌজায় প্রায় ১৩৫ একর ভূমিতে দুটি সরকারি বালুমহাল রয়েছে। সম্প্রতি এ বালুমহালসহ উপজেলার অর্ধশতাধিক স্পটে অবৈধভাবে নদীর বালু, পাহাড়ি টিলার লালমাটি ও ফসলি জমির মাটি কাটা শুরু হয়। বেপরোয়াভাবে মাটি কাটা ও গ্রামের রাস্তা দিয়ে ডাম্পট্রাক ও মাহেন্দ্র দিয়ে এসব মাটি বহন করায় রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া রাস্তার পাশের বাড়িঘর ধুলায় ঢেকে যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

 

পরে মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান দিন ও রাতে উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ইচাইল, জামুর্কি ইউনিয়নের কদিমধল্যা ও আগধল্যা, বানাইল ইউনিয়নের নরদানা, ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া, গোড়াই ইউনিয়নের রশিদ দেওহাটা, কদিম দেওহাটা, মীর দেওহাটা, লতিফপুর ইউনিয়নের যোগীরকোফা, পৌর এলাকার গাড়াইল, বহুরিয়া ইউনিয়নের বুধিরপাড়াসহ মাটি কাটার বিভিন্ন স্পটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ৯ মাটি ব্যবসায়ীকে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া একটি ড্রেজারের বিপুল পরিমাণ পাইপ ধ্বংসসহ জব্দ, দুইটি মাহেন্দ্র, একটি লোভেট ও ছয়টি মাটি কাটার ভেকু ও ১১টি ডাম্পট্রাক জব্দ করা হয়।

 

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বংশাই নদীর গাড়াইল এলাকায় নদীর পাড় কাটার অপরাধে মাটি ব্যবসায়ী আলমগীর মৃধা ও ইউসুফ মিয়ার কাছ থেকে চার লাখ টাকা, গোড়াই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা এলাকার সুজন মিয়া ও যোগীরকোফা এলাকার মহসীন মিয়াকে চার লাখ টাকা, রশিদ দেওহাটা এলাকার শামীম হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা, জিয়াউর রহমানকে এক লাখ টাকা, রোহিতপুর গ্রামের সালাউদ্দিন ও শুভুল্যা গ্রামের মফিজ মিয়ার কাছ থেকে এক লাখ টাকাসহ ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া লৌহজং নদীর বুধিরপাড়া এলাকায় দেওয়া বাঁধও কেটে দেন আদালতের বিচারক।

এ বিষয়ে ইউএনও শাকিলা বিনতে মতিন সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি বালুমহালসহ নদীর পাড় ও ফসলি জমির মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এজন্য প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এ অভিযান চলমান থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *