নিজস্ব প্রতিবেদক :
অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বন্ধু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জানা যায়, অভিনেত্রী হোমায়রা হিমু মারা গেছেন।
ছোট পর্দার পরিচিত মুখ হিমুর মরদেহ তার উত্তরার নিজের বাসায় সিলিং ফ্যানের হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ঝুলছিল।
সে দিন বিকাল ৪টা ৪৬ মিনিটে উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাকে নিয়ে আসেন হিমুর বন্ধু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফি। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই নিখোঁজ হন রুফি।
হিমু আত্মহত্যা করেছেন নাকি হত্যার শিকার, কেন হাসপাতালে হিমুর লাশ রেখে তার ফোন নিয়ে পলাতক ছিলেন রুফি, এসব নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়।
শুক্রবার রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে রুফিকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় র্যাব।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হিমু এর আগেও ৩ থেকে ৪ বার রুফিকে জানিয়েছিলেন তিনি আত্মহত্যা করবেন। তবে করেননি।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। হিমু তখনও বলেছিলেন তিনি আত্মহত্যা করবেন। তখন রুফি বিষয়টি পাত্তা দেননি। কিন্তু হিমু আত্মহত্যা করে ফেলেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, এ ঘটনায় হিমুর খালা বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় জিয়াউদ্দিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এ দিকে র্যাবের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জিয়াউদ্দিন জানিয়েছেন, আড়াই বছর ধরে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন হিমু।
আর এ জন্য তিনি হিমুকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের টাকাও দিতেন। পাশাপাশি তাদের মধ্যে কোনোকিছু নিয়ে ঝামেলা হলেই আত্মহত্যার হুমকি দিতেন হিমু।
ঘটনার আগের দিনও আত্মহত্যা করবেন বলে জিয়াকে চিরকুট লিখেছিলেন অভিনেত্রী।
প্রসঙ্গত, ইতোমধ্যে অভিনেত্রী হিমুর মরদেহ গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের নিয়ে গেছেন স্বজনরা।
জানা গেছে, সেখানে মায়ের কবরের পাশেই সমাহিত করা হবে তাকে।
এর আগে হিমু ও রুফিকে নিয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধানে কিছু তথ্য পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) জ্যোতির্ময় সাহা জানান, হিমুর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে যেটা জানতে পেরেছি, বেশ কিছুদিন ধরে অভিনেত্রী হোমায়রা হিমু বিগো নামে একটি অনলাইন অ্যাপ ব্যবহার করতেন।
এক সময় ওই বিগো অ্যাপে অতিরিক্ত সময় ব্যয় শুরু করেন হিমু। এটায় আসক্ত হয়ে যান তিনি।
এ বিষয়টি বন্ধু (প্রেমিক) মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফি সহ্য করতে পারছিলেন না। এটি নিয়ে রুফির সঙ্গে দ্বন্দ্ব চলছিল হিমুর। রুফি তার বাসায় আসা-যাওয়া করতেন।
এ ছাড়া হিমুর মেকআপম্যান মেহিরও ওখানে আসা-যাওয়া করতেন। এটুকু আমরা জানতে পেরেছি।
টি নি/অ