বুয়েটে চান্স পাওয়া সখীপুরের আল আমিনের পাশে ডিসি এবং ইউএনও
সখীপুর প্রতিনিধি ।।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এ চান্স পাওয়া মেধাবী ছাত্র মো.
আল আমিনের পাশে অর্থ সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক
মোঃ জসীম উদ্দীন হায়দার। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় ভর্তি হওয়ার জন্য
আল আমিনের হাতে নগদ ২০ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি। এ সময় অতিরিক্ত জেলা
প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ ওলিউজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সরোয়ার হোসেন ও
টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী ফারজানা আলম আল
আমিনকে অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। এসময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)
মুঞ্জরুল মোর্শেদ, সখীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাকিল আনোয়ার উপস্থিত
ছিলেন।
আল আমিন সখীপুর উপজেলার কচুয়া গ্রামের ভ্যান চালক আজিজুল মিয়ার ছেলে।
আল আমিন নিজ গ্রামের কচুয়া পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে
এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৭২ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
পরে সরকারি মুজিব কলেজ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে এবার বাংলাদেশ
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ভর্তি পরীক্ষায়
১০২০তম স্থান অর্জন করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং
(আইপিই) বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন কৃতী এ শিক্ষার্থী।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও (ঢাবি) ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ৩৮৭২তম। এছাড়াও মেধাবী এ শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যলয়ে ১৫তম, গুচ্ছে ১০৭তম স্থান অধিকার করেন।
আল আমিন বলেন, ‘আমার বাবা-দাদা ভ্যান চালিয়ে আমার পড়াশোনার খরচ চালাতেন।
এমন একটি পরিবার থেকে পড়াশোনা করা অনেক কষ্টসাধ্য ছিল। আমার বয়স যখন চার
বছর, তখনই আমার মা মারা যান। আমার বাবা, দাদা-দাদি আমাকে পড়াশোনায় সব সময়
উৎসাহ দিতেন। দরিদ্র থাকার পরও পিছপা হননি তারা।
একজন দক্ষ প্রকৌশলী হয়ে পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি দেশের সেবা করতে চান
আল আমিন। আল আমিনের বাবা আজিজুল মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, ‘টাকার অভাবে
ছেলেকে ভালো কোচিং সেন্টারে ভর্তি করতে পারিনি। আল আমিন নিজে নিজে
পড়াশোনা করেই বুয়েটে চান্স পেয়েছে। ঢাকায় সন্তান রেখে পড়াশোনা করাতে গেলে
অনেক টাকার দরকার। এতো টাকা আমরা কই পাবো?
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, পত্রিকা ও ইউএনওর মাধ্যমে বিষয়টি
জানার পর তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে। তার যে কোনো প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের
পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।