সখীপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে শৌচাগার নেই ॥ চিকিৎসক-রোগীদের দুর্ভোগ

141

সখীপুর সংবাদদাতা ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুর সদর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গত পাঁচ বছর ধরে কোন শৌচাগার না থাকায় কর্মরত চারজন নারী-পুরুষ চিকিৎসকসহ রোগীদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শৌচাগার চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করেও এর কোনো সুরাহ হচ্ছে না। সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসে জেলা সিভিল সার্জন বরাবর ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক অপু সাহা একটি আবেদন পাঠানো দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৯৬০ সালে গজারিয়া ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র হিসেবে সখীপুর বাজারে এ সেবা কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। ওই সময় ২০ হাত একটি টিনের ঘরে ওই ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি থেকে সেবা দেয়া হতো। বিগত ২০১৩ সালের দিকে জড়াজীর্ণ ওই টিনের ঘরটি ভেঙে ২৪ হাত দীর্ঘ পাকা টিনসেড ঘর স্থাপন করে। কিন্তু ওই ঘরের ঠিকাদার পাকা ঘর তৈরি করলেও কোনো শৌচাগার নির্মাণ করেননি। বর্তমানে ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দুইজন মহিলা ও দুইজন পুরুষ সেবাদান কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। শৌচাগার না থাকায় পাশের একটি ব্যাংক, মসজিদ ও বাসাবাড়িতে ঢুকে কর্মরতদের জরুরি প্রয়োজনে শৌচাগারের কাজ সারতে হয়। এতে করে প্রতিনিয়তই দুর্ভোগে পড়তে হয় কর্মরত কর্মকর্তা ও সেবা গ্রহণকারী রোগীদের।
গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের সেবাদানকারী নার্স অঞ্জনা ম-ল টিনিউজকে বলেন, প্রায় একমাস ধরে এ হাসপাতালে যোগ দিয়েছি। আমি চিকিৎসা পেশায় আছি। খাবারের পর পর্যাপ্ত পানি খাওয়ার জন্য রোগীদের পরামর্শ দিয়ে থাকি। কিন্তু এ হাসপাতালে পানির ব্যবস্থা ও শৌচাগার না থাকায় আমি নিজেই পানি কম পান করে থাকি। কারণ পানি বেশি পান করলে আমাকে শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে। মাঝে মধ্যে বিপদে পড়লে পাশের ব্যাংক ও বাসা বাড়িতে গিয়ে আমাকে কাজ সারতে হয়।
ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা নিতে আসা এক প্রসূতি মা আছমা বেগম টিনিউজকে বলেন, এ রকম একটি হাসপাতালে ওয়াশরুম নেই এটা কল্পনাও করা যায় না।
ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট উত্তম কুমার সূত্রধর টিনিউজকে বলেন, আমি এ কেন্দ্রে প্রায় একবছর ধরে কর্মরত আছি। খুবই বিপদে আছি। বিদ্যুৎ ছিল না পাশের দোকান থেকে মাসে ২শ’ টাকা দেয়ার শর্তে একটি সংযোগ এনেছি। শৌচাগার না থাকায় পাশের ব্যাংকে গিয়ে বিপদ থেকে উদ্ধার হই। এতে অনেক সময় ব্যাংকের লোকজনও বিরক্ত বোধ করেন। আমি বহুবার শৌচাগার স্থাপন দাবি করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. বেলায়েত হোসেন টিনিউজকে বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুতই ওই কেন্দ্রে একটি শৌচাগার নির্মাণ করে দেয়া হবে।