সখীপুরে গণধর্ষণের ঘটনায় আসামীদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন

138

সখীপুর প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনই বখাটে ও একজন ছাত্র। শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মোজাম্মেলের (৩০) নামে থানায় রয়েছে দুটি মামলা। এর একটি ২০১৯ সালের ৫ মার্চ ইলেকট্রনিক কোম্পানির শো-রুমে চুরি এবং অপরটি ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বরে কচুয়া হাজী চৌরাস্তায় মারামারির মামলা। বর্তমানে তিনি মাঝেমধ্যে স্থানীয় একটি স-মিলের শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। এ ছাড়া অধিকাংশ সময় তাঁর নেতৃত্বেই স্থানীয় কয়েকজন যুবক বাউন্ডেলেভাবে ঘোরাফেরা করেন। অভিযুক্ত মোজাম্মেল কচুয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের সুমেশ আলীর ছেলে।




শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া বুলবুল (২৪) বিবাহিত। কোনো কাজ করেন না, বাবা হজরত আলী অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক ও বোন প্রবাসী। মূলত বাবা ও বোনের দেওয়া অর্থেই চলে তাঁর সংসার। গ্রেপ্তার হওয়া লাবু (২৬) পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। কোথাও ডাক পেলে কাজ করেন, না পেলে ঘুরে ফিরে দিন কাটান।




ফরহাদ আলীর ছেলে মুহাম্মদ বাবুলও (৩০) স-মিলের খন্ডকালীন শ্রমিক। অপর আসামি শফিক (২৫) প্রবাস থেকে ফিরে বিয়ে করেছেন। সম্প্রতি একটি কোম্পানির আঞ্চলিক ডিলারশিপ নিয়েছেন। সে নিজেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও যুবলীগের সমর্থক বলে ফেসবুকে পোস্টার ছেড়েছেন। স্থানীয়রাও জানিয়েছেন, শফিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তবে কালিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক শাহ আলম জানিয়েছেন শফিক যুবলীগের সঙ্গে জড়িত নয়।




এ ছাড়া ধর্ষণ মামলার সবচেয়ে ছোট আসামি আসিফ (২৩) স্থানীয় সরকারি মুজিব কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আগামী ১৭ আগস্ট থেকে তাঁর পরীক্ষা শুরু। প্রতিবেশীরা জানান, ছোট্ট আসিফ এই কাজের সঙ্গে জড়িত বিশ্বাস করতে পারছি না। সম্ভবত সে সঙ্গদোষের শিকার হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, গ্রেপ্তার হওয়া যুবকদের মধ্যে অধিকাংশই কাজকর্ম ফেলে এলাকায় এলোমেলো ঘোরাফেরা করে। এদের কেউ কেউ চুরি ও মাদকের সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।




ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সখীপুর থানার ওসি (তদন্ত) সালাউদ্দিন শনিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে বলেন, গ্রেপ্তার করা ছয়জনের মধ্যে আসামি মোজাম্মেল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। সে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন। অন্য আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।




উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যার পর এক গৃহবধূ স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন। উপজেলার কচুয়া গ্রামের চাঁদের হাটের উত্তর পাশের একটি গজারি বনে এ ঘটনা ঘটে। ওই রাতেই গৃহবধূর স্বামী সখীপুর থানায় মামলা করলে পুলিশ স্থানীয় ছয়জন যুবককে গ্রেপ্তার করে।