সখীপুরে আঙ্গুর চাষে বাজিমাত পুলিশ সদস্য জাহিদুলের

83

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে নিজ জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুর চাষ করে সফলতা হয়েছেন সৌখিন কৃষি উদ্যোক্তা ও পুলিশ সদস্য জাহিদুল ইসলাম। তিনি ইউটিউবে আঙ্গুর চাষ দেখে উদ্ভুদ্ব হোন। পরবর্তীতে ইউটিউব দেখেই পরিকল্পনা করেন বাড়ির আঙিনার পতিত জায়গায় আঙ্গুর চাষ করার। বাড়ির পাশে ২০ শতাংশর জমির উপর প্রথমে ৪৯টি আঙ্গুর চারা রোপন করেন। এর পর থেকেই শুরু করেন আঙ্গুর চাষের নিবির পরিচর্চা। প্রথমবারেই আঙ্গুর চাষে বাজিমাত করেন জাহিদুল। এদিকে আঙ্গুর চাষে তার সফলতা দেখে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার মানুষ আঙুর বাগান দেখতে ছুটে আসছেন। এমন বাগান করতে আগ্রহী হচ্ছেন নতুন নতুন উদ্যোক্তা। জাহিদুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামে। জাহিদুল ঢাকার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের নায়েক পদে কর্মরত রয়েছেন।




সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষেত জুড়ে আঙুর বাগান, থোকায় থোকায় ঝুলে আছে কাচা পাকা রসালু আঙুর। আঙ্গুর ক্ষেতে পরিচর্যা করছেন জাহিদুল ও তার কর্মচারীরা। দর্শনার্থীরা আঙ্গুর দেখতে ভিড় করছেন। জাহিদুল ইসলাম টিনিউজকে বলেন, আমি ইউটিউবের মাধ্যমে মিষ্টি আঙ্গুর চাষ করা দেখি এবং আঙ্গুর চাষে ভালো ফলন হয়েছে। পরবর্তীতে আমি ২০২২ সালের রমজানের শুরুতে ২২ হাজার টাকায় ৪৯টি চারা ক্রয় করে বাড়ির পাশে ২০ শতাংশর জমির উপর রোপন করি। এতে ১ বছরের মধ্যে এ বছর রমজানের আগেই ফলন আসতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ২৫ কেজি করে আঙ্গুর হয়। এতে প্রথমবারেই আমার ফলন ভালো হয়েছে। প্রতিদিন ৮০ কেজি করে আঙুর বাগান থেকে তুলে থাকি। বিক্রি করছি ২০০ টাকা কেজি দরে। ইতিমধ্যেই প্রায় দেড় লাখ টাকার আঙুর বিক্রি করা হয়েছে। এ বছরই প্রায় ৩ লাখ টাকার আঙুর বিক্রির আশা করছি। তিনি টিনিউজকে আরো বলেন, বর্তমানে আমার বাগানে ৫৭ টি আঙ্গুর গাছ রয়েছে। তবে এ বছর লাল, কালো এবং সবুজ রঙের আরো ৩টি নতুন জাতের চারা রোপন করা হয়েছে। ভেজাল মুক্ত খাবার পরিহার এবং স্বাস্থ্য সম্মত খাবার সাধারণ মানুষকে খাওয়ানোর জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছি। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগীতা করেছেন।

জাহিদুল ইসলামের আঙ্গুর বাগানটি দেখাশুনা করেন ভাতিজা রাকিব হোসেন। তিনি টিনিউজকে বলেন, আমি চাচার অবর্তমানে বাগানটি দেখাশুনা করছি। আমাদের আঙ্গুর চাষ করা দেখে পাশ্ববর্তী গ্রামের অনেক মানুষ আঙ্গুর চাষ করতে আগ্রহী হয়েছেন। আঙ্গুর চাষে লাভবান হওয়া যায়। বাগানের কর্মচারী নুরুল ইসলাম টিনিউজকে বলেন, শুরু থেকেই আমি আঙ্গুর বাগানটি পরিচর্যা করছি। এই বাগানের আঙ্গুর খুব সুস্বাদু। মানুষজন আসলে আমি আঙ্গুর বিক্রি করি। বাসাইল উপজেলা থেকে আঙ্গুর দেখতে আসা দর্শনার্থী টিনিউজকে বলেন, আঙ্গুর বাগান দেখে আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। আমি ভবিষ্যতে আঙ্গুর চাষ করবো।




এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসাধারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষন) নুরুল ইসলাম টিনিউজকে বলেন, জাহিদুল ইসলাম ভারতের চয়ন জাতের আঙ্গুর চাষবাদ করেছেন। এতে তার ভালো ফলন হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক তাকে সহযোগিতা করছি। জাহিদুল ইসলামের বাগানের আঙ্গুর সুমিষ্টি। তাই তার বাগানে নতুন নতুন উদ্যেক্তা আসছে। জাহিদুল ইসলাম ২০ শতাংশের জায়গার উপর বাগান করেছে। আগামীতে আরো বেশি জায়গা নিয়ে আঙ্গুর চাষ করা হবে। সখীপুরের লাল মাটিতে আঙ্গুরসহ দেশী বিদেশী নানা ধরনের ফলের চাষ হচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগীতা করা হবে বলে তিনি জানান।