মির্জাপুরে ইউএনও পরিচয়ে প্রতারক চক্র মুক্তিযোদ্ধাদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

148

স্টাফ রিপোর্টার, মির্জাপুর ॥
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী দুই মুক্তিযোদ্ধা মির্জাপুর থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি অবগত হওয়ার পর মির্জাপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৪ জুলাই) বিকেলে জামুর্কী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড উফুলকি গ্রামের ইউপি সদস্য সাহেব খান তার মোবাইলটি ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নোয়াব আলীকে দিয়ে বলেন ইউএনও স্যার আপনার সাথে কথা বলবেন। একজন মহিলা ইউএনও পরিচয় দিয়ে তাকে বলেন- মুজিববর্ষ উপলক্ষে আপনার নামে সরকার দেড় লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে। তাকে একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে বলা হয় টাকা পেতে হলে এই নাম্বারে যোগাযোগ করুন। সেই নাম্বারে ফোন করলে তিনি সোনালী ব্যাংক মির্জাপুর শাখার ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে বলেন, একটি বিকাশ নাম্বার দিলাম। অনুদানের টাকা পেতে হলে এই নাম্বারে তাড়াতাড়ি ৩০ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠান। বৃদ্ধ নোয়াব আলী সরল বিশ্বাসে টাকা ধার করে বিকাশ করেন। তারপর থেকে ইউএনও এবং ম্যানেজারের মোবাইল নাম্বার দুটি বন্ধ পাওয়া যায়। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) তিনি মির্জাপুর থানায় একটি জিডি করেন।




এক সপ্তাহ আগে তরফপুর ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে একইভাবে দুই লাখ টাকা অনুদানের কথা বলে বিকাশ এবং নগদের মাধ্যমে ৭২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। তিনিও মির্জাপুর থানায় একটি জিডি করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া গোড়ান গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক এবং পারদিঘী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহানকে প্রতারক চক্র সোমবার (২৪ জুলাই) মোবাইল ফোনে একই কায়দায় টাকা পাঠাতে বলে। বিষয়টি তাদের নিকট সন্দেহ হলে দু’জনেই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক দুর্লভ বিশ্বাসকে অবহিত করেন। এটি একটি প্রতারনা বলে দুর্লভ বিশ্বাস তাদেরকে সতর্ক করলে তারা টাকা পাঠাননি।
এ ব্যাপারে সোনালী ব্যাংক মির্জাপুর শাখার ম্যানেজার উত্তম কুমার কর্মকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টিনিউজকে বলেন, ডিজিটাল যোগে একটি অসাধু চক্র প্রযুক্তির অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিচ্ছে। সচেতনতাই এথেকে রক্ষা করতে পারে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিলা বিনতে মতিন টিনিউজকে বলেন, বিষয়টি এক সপ্তাহ আগে জানার পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে সতর্ক বার্তা দিয়েছি। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রতারণার বিষয়টি মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সালেহ মাসুদ করিমকে দেখতে বলেছি।