মাহমুদুল হাসান কলেজে অব্যাহতির ৭ বছর পরেও বিধিবহির্ভূতভাবে শিক্ষকের কর্মস্থলে বহাল!
স্টাফ রিপোর্টার ॥
প্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ৭ বছর পরেও বিধিবহির্ভূতভাবে কর্মস্থলে যোগদান করে অদ্যবধি চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে টাঙ্গাইল মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার কারণে টাঙ্গাইলের মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক মো. আব্দুল বারীকে বিগত ২০০৬ সালের (১০ অক্টোরব) প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করে। কিন্তু অব্যাহতির ৭ বছর পর তিনি বিগত ২০১৩ সালে পুণরায় সেই পদে যোগদান করে অদ্যাবধি চাকরি করে যাচ্ছেন। ৭ বছর পর কোন খুঁটির জোরে তিনি চাকরি করে যাচ্ছেন এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা সামালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত ২০০৭ সালের (৭ জুলাই) প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তৎকালীন জেলা প্রশাসক কেএম তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে গভর্নিং বডির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছোহরাব হোসেন জানান, বিগত ২০০৬ সালের (১০ অক্টোবর) থেকে কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক আব্দুল বারী কলেজে অনুপস্থিত আছেন। তাকে কলেজে যোগদানের বিষয়ে ইতিপূর্বে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি অদ্যাবধি কলেজে কাজে যোগদান করেনি এমনকি কোন মৌখিক ও লিখিত কোন উত্তরও কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানায় নাই। তিনি বিদেশে চলে গিয়েছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছেন। আলোচনায় আব্দুল বারীকে বিগত ২০০৬ সালের (১০ অক্টোবর) থেকে অব্যাহতি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহন করে রেজুলেশন করা হয়।
বিগত ২০১৩ সালের (২৯ জুলাই) মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইউসুব আলী মিয়া জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শকের কাছে কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক নিয়োগের নির্বাচনী বোর্ডে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতিনিধি মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের স্মারক নং- আঃমঃ ১৭০০/২। বিগত ২০১৩ সালের (৪ এপ্রিল) জাতীয় দৈনিক এবং (৭ এপ্রিল) সহানীয় দৈনিক পত্রিকায় শূন্য পদে কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক চেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির পর কোন রকম পরীক্ষা ছাড়াই পুণরায় কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক আব্দুল বারী কলেজে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া শুরু করেন। সেই থেকে অদ্যবধি তিনি ক্লাস নিয়েই যাচ্ছেন। এছাড়া তাঁর পরে অনেক শিক্ষক চাকরিতে যোগদান করে পদোন্নতি পেলেও তিনি এখনো পদোন্নতি পায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন শিক্ষক জানান, অব্যাহতি প্রদানের পূণনিয়োগটি বিধিসম্মতভাবে হয়নি। আমরা অনেকেই বারি সাহেবের সাথে বা তার পরে চাকরিতে যোগদান করে পদোন্নতি পেলেও তিনি এখনো প্রভাষক পদেই রয়েছেন। এ থেকেই বোঝা যায়, তাঁর নিয়োগটি বিধিসম্মত নয়। তিনি কোন খুঁটির জোরে এখানে শিক্ষকতা করছেন। তিনি যদি বিধিসম্মতভাবে নিয়োগ পেতেনই, তাহলে তিনি কেন পদোন্নতির জন্য আবেদন করছেন না।
আব্দুল বারী কলেজে অনুপস্থিতি এবং চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমাকে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ যথাযথভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে তিনি এই সংক্রান্ত কোন প্রমাণাদি দেখাতে পারেননি।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. ইব্রাহীম বলেন, এই বিষয়টি আমার জানা নেই। তাই এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারছি না।
প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, আমি সব কিছু নিয়মতান্ত্রিকভাবে করতে পছন্দ করি। যেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে সেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।