যাত্রীসেবায় উন্নতমানের বাসের দাবি মধুপুর-ধনবাড়ীবাসির
এম.এইচ.রহমান ফারুকঃ ধনবাড়ী-মধুপুরবাসীর জন্য চরম দুর্ভোগের এক অমানবিক প্রেক্ষাপট হচ্ছে ঢাকা-ধনবাড়ী যোগাযোগব্যবস্থা। প্রতিদিন এই রোডে হাজার হাজার যাত্রী ধনবাড়ী_মধুপুর_টাঙ্গাইল_ঢাকা যাতায়াত করে থাকে, কিন্তু একটি মাত্র সার্ভিসই হচ্ছে এই রোডের ভরসা যার ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির আর শেষ নেই। প্রতিনিয়তই সৃষ্টি হচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার, নিরাপদ চলাচলে হচ্ছে বিঘ্নতা, নামে সিটিং সার্ভিস বলা হলেই বাস্তবে তার চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। ঢাকা মধুপুরের দূরত্ব ১২৭.৭ কি.মি. যেখানে বাস ভাড়া ২০০ টাকা, যেখানে সময় লাগার কথা সর্বোচ্চ ৩ ঘন্টা আথচ সেইখানে সময় লাগে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা। জিম্মি হয়ে পড়েছে এই রোডের চলাচলকারী সকল সাধারণ যাত্রী, মানবতা যেন ডুকরে কাঁদছে এই রোডের যাত্রীদের ক্ষেত্রে। অসহায়ত্ব যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে চায় এই রোডে চলাচল কারি সাধারণ যাত্রী, ভালো মানের বাস সার্ভিস এখন গণমানুষের দাবীতে পরিণত হয়ে পড়েছে। গতকাল ২৯ জুন ২০১৮ ঢাকায় (ধনবাড়ী-মধুপুর) এর সাধারন জনগণের যাত্রীসেবা মানসম্মত করনের এবং ভালো মানের বাস সার্ভিস চালুর দাবীতে ঢাকায় একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ধনবাড়ী মধুপুর রুটে এসব বাস সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন ভাড়ার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আদায় করছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা যাত্রী সেবার দোহাই দিলেও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। এই জনদূর্যোগ থেকে রেহাই চাই। আরেক ভাই মোঃ সানোয়ার হোসেন বলেন, এই রুটে একমাত্র বিনিময় সার্ভিসের বাস সিটিং সার্ভিস নামে চালালেও বাস্তবে সম্পুন্ন লোকাল, অথচ ভাড়া নিচ্ছেন সিটিং সার্ভিসের। যার দরুন বিড়ম্বনা আর ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের। মধুপুরের সন্তান বাবলা মনিরুজ্জামান জানায়, মধুপুর ধনবাড়ী রুটে সিটিং সার্ভিসের নামে যে সার্ভিস চালানো হচ্ছে তাদের একটি চক্র পুরাই এই রুট কে সিন্ডিকেট করে রেখেছে। তাদের ক্ষমতাবল প্রয়োগ করে এই রুটে ভালো মানের বাস কোম্পানি গুলি আসতে দিচ্ছে না। এই সিন্ডিকেট ভেংগে অতিলম্বে এই রুটে ভালো কোম্পানির বাস সার্ভিসের দাবী জানাই। ধনবাড়ির মোঃ শাহজাহান আলী বলেন, এই রুটে চলাচল কারি কোন যাত্রী সেবা নেই, যেসকল বাস চলাচল করে সেই গুলির নেই রুট পারমিট, নিম্নমানের বাস সিটগুলোও ভাঙা, জানালায় নেই গ্লাস। যেখানে সেখানে থামিয়ে যাত্রী তোলা হয়, অপরিচ্ছন্ন আসন, আর ছারপোকা তো নিত্যদিনের সঙ্গী। লক্কড়-ঝক্কড় বাসগুলোকে বানানো হচ্ছে সিটিং সার্ভিস আর ভাড়ার ক্ষেত্রে দ্বিগুণ তো আছেই। আমরা ধনবাড়ী মধুপুর বাসী এর থেকে মুক্তি চাই। আলোকিত মধুপুর ফেসবুক গ্রুপের এডমিন হেলালুর রহমান বলেন, ধনবাড়ী থেকে মধুপুর ঘাটাইল দিয়ে যাতায়াতকারী একমাত্র গাড়িটি ‘সিটিং সার্ভিস’ নাম দিয়ে চললেও বাস্তবে পুরাই বিপরীত। সিটের অতিরিক্ত যাত্রী তো আছেই, অভার লোড যাত্রী নিয়ে দৈনন্দিন চলাচল করছে। আর ভাড়ছে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি। অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারনে বাড়ছে দুর্ঘটনা, হারাতে হচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ, অনেকেই আহত হয়ে পুংগত্ব নিয়ে জীবনযাপন করছে। এভাবে আর কতদিন জিম্মি হয়ে থাকতে হবে আমাদের। আমরা এর থেকে মুক্তি চাই, দরকার হলে আমরা সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে আমাদের বেহালদশার কথা জানাবো। কাজ না হলে খুব শিঘ্রই ধনবাড়ী মধুপুরের মানুষ নিয়ে আন্দোলনে যাবো। আমরা বাচতে চাই, আমরা ভালো যাত্রী সেবা চাই। সভার সমন্নয়ক লোটন ইমরুল হাসান বলেন, এই বিনিময় গাড়ীতে শুরুতে কিছু ফ্যান চালু থাকলেও বর্তমানে অধিকাংশ ফ্যানও সচল নেই। সিটগুলোতে নেই পর্যাপ্ত জায়গা। বসলেই হাঁটু লেগে যায়। যাত্রীদের নেই বিন্দুমাত্র সেবা। রাস্তায় অচল হয়ে যাচ্ছে গাড়ী, ধনবাড়ী থেকে ঢাকা আসতে সময় লাগায় কয়েকগুণ, যত্রতত্র অবস্থা, যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানামা, এইসব কারণে ধনবাড়ী মধুপুরের মানুষ আজ অতিষ্ঠ, এই দাবী এখন গণমানুষের দাবীতে রুপ নিয়েছে। আমরা আজ এখানে একত্রিত হয়েছি এর একটা সঠিক সমাধান চাই সরকারের কাছে। এর জন্য যা যা করতে হবে আমরা সব করে যাবো। এটা অবশ্যই একটি মানবিক কাজ হবে। আমরা নির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধাচারন করছি না, আমরা চাই ভালো মানের বাস সার্ভিস। আমদের পরিবারপরিজন নিয়ে যেন নিরাপদ যাতায়াত করতে পারি এটাই আমাদের দাবী। আজ আমরা যারা এখানে বসেছি আমরা প্রতিজ্ঞা করি, আমরা এর সমাধান করেই ছাড়বো ইনশাআল্লাহ। আমারা মনে করি ধনবাড়ী-মধুপুরবাসীর একাত্বতাই এনে দিতে পারে একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন যাত্রীসেবার পরিবেশ। আমাদের দাবী একটাই আমরা ভালো মানের বাস সার্ভিস চাই। সভা থেকে পরিবর্তী কার্যক্রম এর উপর বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।