মধুপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ভিজিট বিড়ম্বনা ॥ রাত পর্যন্ত শিক্ষকদের অপেক্ষা

0 94

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) ভিজিট বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন শিক্ষকরা। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে এ রিপোর্ট লেখাকালীন রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তিনটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবস্থান করতে হয়েছে বিদ্যালয়ে। যদিও তাদের বিদ্যালয়ের শেষ সময় ছিল বিকেল সাড়ে তিনটায়। তবে অতিরিক্ত ওই সময় অপেক্ষায় চরম বিড়ম্বনায় পড়েন মহিলা শিক্ষকসহ অসুস্থ শিক্ষকরা। বুধবার (২২ মার্চ) এমন ভোগান্তির শিকার হয়েছেন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।




নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা টিনিউজকে বলেন, মধুপুরের শোলাকুড়ি ডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভিজিট করতে আসেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও)। এ সংবাদে মধুপুর উপজেলার সীমানাবর্তী বিশেষ করে রাস্তার ধারের বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সকাল সাড়ে ৮টায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অবস্থান নেন। বিড়ম্বনায় ছিলেন বেশকয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ডিপিও ফেরার পথে রাত অবধি তাদের অবস্থান করতে হয়েছে বিদ্যালয়ে। ফেরার পথে অফিস টাইমে মধুপুর উপজেলার পীরগাছা, ভুটিয়া, গাছাবাড়ী, জলছত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে পারেন তিনি। এমন সম্ভাবনার শঙ্কায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন বাকি অন্তত ৫/৬ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। কাকরাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিএডিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পৌর এলাকার চাড়ালজানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধুপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মালাউড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চক গাংগাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত অবধি তাদের অবস্থান করতে হয়েছে। তবে এই ভিজিট প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে মৌখিক ঘোষণা ছিল তিনি শিক্ষকদের সাথে কথা বলে তাদের ও বিদ্যালয়ের খোঁজখবর নিবেন। এরপরও তিনি সন্ধ্যায় এক স্কুলে ঢুকে নামাজ পড়ার জন্য বের হন ডিপিইও। এ সময়ও বাকি ছিল চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাত হয়ে গেলেও ডিপিইওর জন্য রাত অবধি অপেক্ষা করতে হয়েছে ওই শিক্ষকদেরকে।




রাত সাড়ে আটটার সময় মালাউড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোম্মানা জান্নাত টিনিউজকে বলেন, এখন আমি বাসায়। আজ সন্ধ্যার সময় ডিপিইও স্যার বিদ্যালয় এসেছিলেন। তিনি বিদ্যালয়ের কার্যক্রম দেখাসহ শিক্ষকদের খোঁজখবর নিয়ে গেছেন।
মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান শামীম টিনিউজকে বলেন, আমি শোলাকুড়ি স্কুলে গিয়েছিলাম। এ ব্যাতিত অন্য কোন স্কুলে আমি যাইনি।
মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ টিনিউজকে বলেন, মধুপুরের শোলাকুড়ি ডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে সকাল ১০টায় আসেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিউও)। বেলা সাড়ে তিনটায় ওই বিদ্যালয় থেকে বিদায় নেন। এ সময় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে তিনি আরো ৯টা বিদ্যালয়ে যান। ওই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের খোঁজখবর আর বিদ্যালয়ের অবস্থা দেখেন তিনি।




এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ টিনিউজকে জানান, মধুপুরের শোলাকুড়ি ডিপি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভিজিট করতে যান তিনি। বিদ্যালয়টি অসাধারণ। এরপরও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তার সাথে যোগাযোগ করেন। এ কারণে রাত অবধি তিনি উপজেলার ১০টি বিদ্যালয় পরিদর্শন ও শিক্ষকদের খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বিগত ২০০৯ সালের পর কোন (ডিপিইও) এই উপজেলার বিদ্যালয়গুলো ভিজিট করেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। তিনি যাওয়ায় শিক্ষকরা ভীষণ খুশি। তবে বিদ্যালয় ছুটির পর অতিরিক্ত সময় শিক্ষকদের অপেক্ষা আর বিড়ম্বনা সৃষ্টির বিষয়ে কোন কথা বলেননি তিনি।

 

 

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.

ব্রেকিং নিউজঃ