ভূঞাপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
ভুঞাপুর সংবাদদাতাঃ
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকার মোহাম্মদ আলীকে হত্যার অভিযোগে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহিনুল ইসলাম তরফদার বাদলকে প্রধান আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও এ মামলায় আসামী করা হয়েছে আরো ১৫ জনকে। মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুস সাত্তার আকন্দের কোর্টে দায়ের করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লুনা ফেরদৌস ভূঞাপুর থানার ওসিকে অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। পরে ভূঞাপুর থানার ওসি মামলাটি রেকর্ড করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভূঞাপুর পৌর নির্বাচনে ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক তরফদারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতেন পশ্চিম ভূঞাপুর গ্রামের মোহম্মদ আলী। ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর অপর কাউন্সিলর প্রার্থী আরিফ তরফদার রুবেলের পক্ষে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহিনুল ইসলাম তরফদার বাদল ও তার লোকজন নির্বাচনী প্রচারণার জন্য মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে যান। কিন্তু মোহাম্মদ আলী রুবেলের পক্ষে কাজ করতে পারবে না বলে সরাসরি জানিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হন সাহিনুল ইসলাম তরফদার বাদল। এ সময় তিনি মোহাম্মদ আলীকে হুমকি দেন যে রাজ্জাকের নির্বাচনী প্রচারণায় তাকে পেলে খুন করে ফেলা হবে। গত ২৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৭ টার দিকে মোহাম্মদ আলী রাজ্জাকের নির্বাচনী প্রচারণা বের হয়ে রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন সকালে তার লাশ পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকার মালেকের বাড়ির পাশে আম গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে মোহাম্মদ আলীর লাশ নামায়। এ সময় লাশের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ওইদিনই ভূঞাপুর থানায় নিহতের ভাই শুকুর আলীকে দিয়ে ভূঞাপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করানো হয়। পরে নিহতের ছেলে আব্দুস সাত্তারের বিষয়টি সন্দেহ হলে তিনি বাদী হয়ে গত ৭ জানুয়ারি ভূঞাপুর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহিনুল ইসলাম তরফদার বাদলকে প্রধান আসামী করে জলিল আকন্দ, রহিম আকন্দ, মোশারফ তরফদার, তোফাজ্জল হোসেন, আরিফ তরফদার, রাজ্জাক তরফদার, ছাইদুল তরফদার, সাদ্দাম তরফদার, ফেরদৌস তরফদার, মারুফ তরফদার, ছাইফুল ইসলাম তালুকদার টিটু, মিঠু তালুকদার, মাহমুদুল হাসান রমি, পারভেজ তালুকদার ও কাওছার তরফদারের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত শুনানী শেষে অপমৃত্যুর মামলাটি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। গত ২০ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানীতে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট লুনা ফেরদৌস ভূঞাপর থানার ওসিকে অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ। পরে ভূঞাপুর থানার ওসি মামলাটি রেকর্ড করেন। যার নম্বর-৯।
এ মামলার বিষয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ ফজলুল কবির বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আসল হত্যাকারীদের খুঁজে বের করা হবে।