ভূঞাপুরে যমুনার চরে ভুট্টার বাম্পার ফলন
স্টাফ রিপোর্টার ॥
চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরের চরাঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার আবাদে তুলনামূলক খরচ কম ও উৎপাদন বেশি। এছাড়াও উৎপাদিত ভুট্টা বাজারে ভাল দরে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায় বলে কৃষকরা এর চাষে ঝুঁকছেন। তবে এ বছর কৃষকরা বাম্পার ফলন পেলেও বর্তমান বাজার দরে হতাশা প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, ভুঞাপুর উপজেলার যমুনার বুকে জেগে উঠা অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ব্যাপক পরিমানে ভুট্টা আবাদ করেছেন। বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ভুট্টার চাষের মাধ্যমে সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বন্যার পানিতে পলি জমে জমি আরো উর্বর হয়েছে। তাই ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। এছাড়াও এবছর আবহাওয়া ভাল থাকায় বাম্পার ফলনও হয়েছে। আশানুরূপ ফলন পেলেও বর্তমান বাজারদর কম হওয়ার কারণে চিন্তায় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলসহ উপজেলায় ৩ হাজার ১০ হেক্টর ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এতে ২৭ হাজার ৬৪২ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের যমুনা চরাঞ্চলের ভুট্টা চাষি কোরবান তালুকদার, আব্দুল মালেকসহ আরো কয়েকজন কৃষকরা টিনিউজকে বলেন, বন্যার কারণে আমাদের তৈরী করা বীজতলা, সবজি খেত ও ফসল সব নষ্ট হয়ে যায়। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বালু চরের জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর ফলন বেশি হয়েছে। তবে বর্তমান বাজারদর কম। স্থানীয় হাটে প্রতিমণ শুকনো ভুট্টা ৯০০-১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর এমন থাকলে আমরা লাভ করতে পারবো না।
রামপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি চান্দু শেখ টিনিউজকে বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পলি জমে জমি আরো উর্বর হয়। এছাড়াও এখানকার মাটি ভুট্টা চাষের উপযোগী হওয়ায় বাম্পার ফলন হয়েছে। এবছর আমি ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি ২৫-৩০ মণ করে ফলন পেয়েছি। সকল খরচ বাদ দিয়ে ৩ লাখ টাকা লাভের আশা থাকলেও বর্তমান বাজারদর কম থাকায় সেই আশা করতে পারছি না। গত বছর প্রতিমণ ভুট্টা ১২০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারলেও এবছর ৮০০-১০০০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির টিনিউজকে বলেন, চলতি বছর যমুনার চরাঞ্চলে ২ হাজার ১৫২ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৩ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। কম খরচে চাষ করে বেশি উৎপাদন করা যায় বলে কৃষকরা এর চাষে ঝুঁকছেন। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে উন্নত মানের বীজ ও সার বিতরন করেছি। এছাড়াও আমরা মাঠ পর্যায়ে যেয়ে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি।