বাসাইলে নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত কাঠ মিস্তিরা

176

হাসান সিকদার ॥
কাঠ মিস্তির কাজ করেই আমাগো পেট চলে। কাঠ মিস্তির কাজ যদি না করতাম তাহলে আমাগো পেট চলতো না। ছোট সময় থেকেই বাপ-দাদার কাছে হাতেখড়ি হয় কাঠ মিস্তিরি কাজ। কাঠ মিস্তির কাজ করা আমাদের নেশা, কাঠ মিস্তির কাজ আমাদের পেশা। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের প্রফুল্ল সূত্রধর (৬৫)। প্রফুল্ল সূত্রধর উপজেলা সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের মৃত নেপাল সূত্রধরের ছেলে। বর্ষায় নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রফুল্ল সূত্রধরসহ অন্যান্য কাঠ মিস্তিরিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাসাইল উপজেলা সদর ইউনিয়নের রাশড়া করিম বাজারে কাজ শুরু করছেন। নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি। প্রফুল্ল সূত্রধরের সাথে আরও দুইজন কাজ করছেন তারাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। একটি নৌকা তৈরিতে তিনজনের দুই-তিনদিন সময় লাগে। কেউ কাঠ কাটতেছে আর কেউ লোহা লাগাচ্ছেন। বর্ষার সময় হলে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।




কাঠমিস্তি প্রফুল্ল সূত্রধর টিনিউজকে বলেন, ৫৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাঠ মিস্তির কাজ করি। ছোট সময় থেকেই হাতুড়ি ও বাটালের সাথে বন্ধুত্ব হয়। আমাদের সময় তেমন কেউ পড়াশোনা করতো না। বাপ-দাদারা বলছে কাঠমিস্তির কাজ করেই পেট চালাতে হবে। তাই বাপ-দাদার সাথে কাজ শিখেছি। বাপ-দাদার সাথে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতাম। বর্ষার সময় হলে নৌকা তৈরি করি আর শুকনো মৌসুমে ঘর, খাট, ড্রেসিং টেবিল, আলমারি তৈরি করি। এই এলাকায় বর্ষার সময়ে নৌকার কদর থাকে। বর্ষার সময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। বাপ-দাদারা শিখিয়ে যাওয়া কাজ এখন আমাদের নেশা ও পেশা হয়ে গেছে। প্রতিদিন ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা মজুরি পাই। ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকায় নৌকা বিক্রি করা যায়।




কাঠ মিস্তি রমেন শ্যান্নাল টিনিউজকে বলেন, ছোট সময় থেকেই হাতুড়ি বাটলের সাথে বন্ধুত্ব করে আমাদের জীবন সংসার চলে। লেখাপড়া করি নাই। বাপ-দাদার পেশাকেই মূল পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি। বউ পোলাপান নিয়ে মোটামুটি ভালোই চলতে পারি। প্রতিদিনের মজুরি পায় ৭০০-১০০০ টাকা। বর্ষার সময় নৌকা তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এই পেশায় ৩০-৩৫ বছর ধরে আছি। আরেক কাঠ মিস্ত্রি সখি সরকার টিনিউজকে বলেন, বর্ষার সময় নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কাঠ মিস্তিরা। বর্ষার সময় নৌকার খুবই কদর থাকে। কাঠ মিস্তির কাজে আছি প্রায় ৩০ বছর ধরে। বাপ-দাদার পেশায় আমাদের পেট চলে। বর্ষার সময় নৌকার কাজ বেশি করি। নৌকা তৈরিতে লোহা, কাঠ, স্টিলের প্রয়োজন হয়। আর অন্য মৌসুমে ঘরের কাজ করি।