নাগরপুরে প্রথম পান চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জহিরুল

0 97

স্টাফ রিপোর্টার ॥
বাঙালির আতিথেয়তার অন্যতম অনুসঙ্গ পান। বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠান, পালা-পার্বণ, বিয়েসহ যে কোন আয়োজনে সবশেষে যেন পান থাকতে হবে। সেই ঘুম পাড়ানি মাসিপিসির ছড়ার মতো বলতে হয়, ‘বাটা ভরা পান দেবো, গাল ভরে খেয়ো’। গ্রাম বাংলার এমনকি শহুরে বাঙালির অনেকেই খেয়ে থাকেন পান।




আর সেই পান টাঙ্গাইলের নাগরপুরে প্রথম চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জহিরুল ইসলাম (৩৫)। সে নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের মৃত সরব আলীর ছেলে। অন্যের দোকানে টেলারিং এর কাজ করে অভাব-অনটনে সংসার চলে তার। এক বন্ধুর সাথে পরামর্শ করে রাজশাহী থেকে মিষ্টি জাতের প্রায় ৫ হাজার পানের চারা এনে বাড়ির পরিত্যক্ত পতিত জমিতে তা রোপন করেন। পান চাষ করেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি ও তার পরিবার। এখন শখের বসে গড়ে তোলা পানের বরজের পরিচর্যা করে দিন কেটে যায় তার। বরজের পান বিক্রি করেই স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে চলছে জহিরুলের সংসার।




পান চাষী জহিরুল ইসলাম টিনিউজকে জানান, নাগরপুর উপজেলায় তিনিই প্রথম পান চাষ শুরু করেন। রাজশাহী থেকে পানের ডগা এনে প্রায় ২৫ শতাংশ ভিটে বাড়ির পতিত জমিতে রোপন করেন। চারদিকে পাট খড়ির বেড়া ও উপরে ছাউনি দিয়ে ছায়ার ব্যবস্থা করা হয়। এতে তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। কোন রকম সমস্যা দেখা দিলে রাজশাহী থেকে অভিজ্ঞ দুই-একজন পান চাষি এনে তাদের পরামর্শ নেন। ৯ মাস পর থেকে পান তোলা শুরু করেন তিনি। স্থানীয় বাজার ছাড়াও রাজশাহীতে পান বিক্রি করতে নিয়ে জান জহিরুল। তবে পান চাষের জন্য জমি উপযোগী কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল তার। সেই সংশয় কাটিয়ে এখন সফলতার মুখ দেখছেন। কয়েক মাসেই পুরো খরচের টাকা উঠে আসে তার। এখন সে একজন সফল পান চাষি। তিনি টিনিউজকে আরো বলেন, তার অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল না। তাই যদি উপজেলা প্রশাসন কিংবা কৃষি অফিস থেকে একটু সহযোগিতা পান তাহলে আরো বড় পরিসরে পান চাষ করবেন।




নাগরপুর উপজেলার ভাতশালা গ্রামের সোলাইমান মাষ্টার ও প্রতিবেশী মহসিন মোল্লা টিনিউজকে বলেন, আমাদের এলাকায় পান চাষ হবে এটা আমরা বিশ^াসই করতে পারিনি। জহিরুলের সফলতা দেখে আমরা এলাকাবাসি খুবই খুশি। জহিরুলকে দেখে এখন জেলার আরও অনেকে পান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করছি। তবে এ বিষয়ে এখনও কৃষি বিভাগ কোন সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বিশ্বাস টিনিউজকে বলেন, নাগরপুর উপজেলায় পান চাষে জহিরুল ইসলাম একজন সফল উদ্যোক্তা। পান যেহেতু অর্থকরী ফসল। তাই কৃষি অফিস থেকে জহিরুল ইসলামসহ আরও যারা পান চাষে এগিয়ে আসবে তাদের সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করা হবে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.

ব্রেকিং নিউজঃ