নাগরপুরে আওয়ামী লীগ নেতা হিমুর হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ওসি’র জিডি

0 203

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ সম্পাদক তারেক শামস খান হিমু নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিনকে হুমকি দিয়েছেন। এতে তিনি নিজ কর্মস্থলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ ঘটনায় ওসি নাগরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। মারধরের একটি মামলায় আটককৃত আসামীদের ছেড়ে না দেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা হিমু ওসিকে হুমকি দেন।
জানা গেছে, নাগরপুরের বারাপুষা গ্রামে অঞ্জনা নামের এক নারী গত (১২ জুলাই) তার স্বামীর সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে চলে যায়। কয়েকদিন পর (১৭ জুলাই) সে ভুল বুঝে সে আবার বাড়ি ফিরে আসে। এ ঘটনায় বেকড়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার নুরু মিয়া ও স্থানীয় কিছু মাতব্বর ওই নারীর ওপর চরিত্র খারাপের অভিযোগ এনে গত (২০ জুলাই) তার বিরুদ্ধে সালিশী বৈঠক বসায়। সালিশী বৈঠকে অঞ্জনার স্বামী সন্তানকে বেদম মারপিট করা হয়। ওই নারী ভয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। পরে আসামীরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে ওই নারীকে বেদম মারপিট করে। এ ঘটনার খবর পেয়ে নাগরপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ওই নারীকে উদ্ধার করে এবং মারধরের ঘটনায় জড়িত চারজন নুরু মেম্বার, ওয়াজেদ আলী, হারেজ মিয়া ও শাহজাহানকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদি হয়ে গ্রেফতারকৃত চারজন ও কালাম, সিরাজ ও রবিসহ মোট সাতজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে গ্রেফতারকৃত আসামীদের ছেড়ে দেয়ার জন্য তারেক শামস খান হিমু নাগরপুর থানার ওসিকে গত (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইলে ফোন দেন। ফোন দিয়ে ওসিকে ধমক দিয়ে গ্রেফতারকৃতদের ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দেন। ওসি এ সময় বিনয়ের সাথে আইনী ব্যাখ্যা দিয়ে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তখন উত্তেজিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হিমু বলেন, পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে মানুষকে গ্রেফতার করেন। আমি পৃথিবীর সব বুঝি। আমাকে ব্যাখ্যা দিবেন না। আমি বলছি ছেড়ে দিবেন। না ছাড়লে অসুবিধা হবে। আমি আপনাকে দেখে নিব। তার এই হুমকির বিষয় নিয়ে ওসি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে রাতেই নাগরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।
ওসি মাইন উদ্দিন সাধারণ ডায়েরীতে (জিডি) আরো উল্লেখ করেছেন, এই আওয়ামী লীগ নেতা মাঝে মধ্যেই মাদক মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের ছেড়ে দেয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে চাপ দেন। তার এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেন ও তাদের গ্রেফতার না করার জন্য তদবীর করেন। গত কয়েক মাস আগে রাথুরার মেলাতে পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের আস্তানা গুড়িয়ে দিলে হিমু তার প্রতিবাদ করেন ও পুলিশের বিরুদ্ধে বিষোধগার করেন। তার হুমকিতে কর্মস্থলে নিরাপত্তহীনতা ভুগে থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন বলে ওসি ডায়েরীতে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে তারেক শামস খান হিমুর সাথে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি টিনিউজকে বলেন, ওসিকে আমি হুমকি দেয়নি। গ্রেফতাকৃতদের ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তাছাড়া মাদক মামলায় আটক এমন কারও জন্য আমি তদবির করিনি। ওসি মিথ্যা কথা বলেছেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

ব্রেকিং নিউজঃ