ধনবাড়ীতে টাকা ফেরত চাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে কিল-ঘুষি
ধনবাড়ী প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কার্যালয়ের প্রধান সহকারি আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করার অভিযোগ ওঠেছে। আহত নারীকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।
বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে উপজেলা অফিস কক্ষে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা অভিযুক্ত আব্দুর রশিদকে অফিসে কক্ষেই অবরোধ করে রাখে। সংবাদ পেয়ে ধনবাড়ী-থানা পুলিশ অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেয়। ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার লাভলী (২৩) ধোপাখালী ইউনিয়নের বিলপাড়া এলাকার মোবারক হোসেনের স্ত্রী। ঘটনাটি বৃহস্পতির (১৬ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার লাভলী বলেন, ‘আমাকে অন্তঃসত্ত্বা কার্ড দেয়ার কথা বলে একই ইউনিয়নের নরিল্যা গ্রামের মিনা আক্তারের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা নেয়। এছাড়াও আব্দুর রশিদ অন্তঃসত্ত্বা, শিশু ভাতা, চাউলের কার্ড ও ঘর দেয়াসহ সরকারি নানা সুবিধা দিবে বলে জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নরিল্ল্যা শাহপাড়া এলাকার প্রায় ৩০/৩৫ জন নারীর নিকট থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা আব্দুর রশিদকে ওঠিয়ে দেয় মিনা আক্তার। কার্ড চাইতে গেলে কালক্ষেপণ করে। বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সকল ভুক্তভোগীরা ওই অফিস ঘেরাও করে। এ সময় সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। অফিস কক্ষেই জ্ঞান হারিয়ে ফেললে অপর নারীরা উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতলে ভর্তি করে। মাথায় প্রচন্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়।’
নরিল্ল্যাহ শাহপাড়া এলাকার ভুক্তভোগী রুমি আক্তার, নাসিমা বেগম, কহিনুর, শাহানাজ বেগম, সাবিনাসহ আরও অনেকেই বলেন, ৩০ থেকে ৩৫ জন নারীর নিকট থেকে ৩ থেকে ৭ হাজার টাকা করে প্রায় দেড় লাখ টাকা নিয়েছে আব্দুর রশিদ। অন্তঃসত্ত্বা লাভলীকে মাথায় কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সে। অফিসটি অনিয়ম অসদাচারণ, আত্মসাৎ, ঘুষ, বকশিশ ও কমিশনে পরিণত হয়েছে। আমরা বিচাই চাই।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শওকত হোসেন বলেন, এটা কোনো অফিসের আর্থিক বিষয় নয়। এটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
ধনবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এইচএম জসিম উদ্দিন বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আব্দুস রশিদকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসলাম হোসাইনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটি মিটিংয়ে যোগ দিয়ে ছিলাম। বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।