দেলদুয়ারে বিএনপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ গড়ালো এমপির সমালোচনায়
স্টাফ রিপোর্টার ॥
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি, জামায়াত নৈরাজ্য ও অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এক পর্যায়ে সমাবেশ গড়ায় স্থানীয় এমপি আহসানুল ইসলাম টিটুর বিরুদ্ধে। অনুষ্ঠানের প্রায় সকল অতিথিই এমপির বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করে বক্তব্য দেন।
রবিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার বজলুর রশিদ পটলুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন মোর্শেদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও তথ্য, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট তারানা হালিম।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট তারানা হালিম বলেন, এমপি! এমপির বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। আমরা বলতে চাই না। নৌকা প্রতীক যিনি পাবেন তাকেই ভোট দেবেন। কিন্তু যে ব্যাক্তিটির হাতে তুলে দেবেন সেই অদৃশ্য ব্যাক্তিটিকে বলি একটু জনবান্ধব হতে হবে, গণ বান্ধব হতে হবে, কর্মী বান্ধব হতে হবে। আপনার নিজের দলের নৌকা মার্কার বিরুদ্ধে অন্য দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করার মতো এমন ধৃষ্টতা দেখাবেন না। এটা আওয়ামী লীগের নীতি নয়।
এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লায়ন এম শিবলী সাদিক বলেন, শুধু এমপিকে বলে দিতে চাই -বৃহত্তর আওয়ামী লীগ, তৃণমূল আওয়ামী লীগ, থানা আওয়ামী লীগকে অবহেলিত রেখে ঐ চিটাগাং থেকে আপনার কর্মচারী লীগ আইন্যা দেলদুয়ারকে শাসন করবার চেষ্টা করবেন না। আপনি আমাদের অবহেলিত নেতাকর্মীদের দিকে তাকান, দেখবেন আপনি ভালো থাকবেন। না হলে আপনার কোন পলানের জায়গা থাকবে না। আপনার কাছে, আপনার বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখছে -কেন শুনতে হয় ভাই লীগ, কর্মচারী লীগ। কেন শুনতে হয় মাইনাস আওয়ামী লীগ। এটা আমাদের জন্য প্রেষ্টিজ ইস্যু।
সম্মানিত অতিথি যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য ও টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তারেক শামস্ খান হিমু বলেন, দলীয় সংসদ সদস্য মনে করতে পারে আমরা তার প্রতিদ্বন্দ্বী হতে চাচ্ছি। এটাও একটা সমস্যা। এজন্য সরকারি দলে কাজ করে কোন মজা পাওয়া যায় না।
তিনি আরো বলেন, আমাদেরকে নেত্রী বলেছে, দলীয় এমপির বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না। নেত্রীর নির্দেশ মানতেই হবে। কিছু করার নাই।
আমরা যখন নেত্রীর নির্দেশ মেনে চলছিলাম ঠিক তখন আমাদের সংসদ সদস্য জনাব আহসানুল ইসলাম টিটু সাহেব উনি মঞ্চে বসে একপাশে বয়োজ্যেষ্ঠ শ্রদ্ধাভাজন সভাপতি ফজলু ভাই, আর এক পাশে মল্লিক ভাই। মল্লিক ভাইকে পাশে নিয়ে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশীরা আছেন তাদের কে নিয়ে উনি তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা শুরু করলেন। উনি এমনও কথা বলা শুরু করলেন যে, ঢাল নাই, তলোয়ার নাই, নিধিরাম সর্দার। আমি বলতে চাই, ঢাল হলো কারা, সাধারণ জনগণ আর তলোয়ার হলো দলের নেতা কর্মীরা। আপনি আজকে এসে দেখে যান যে, এই মঞ্চে জনগণ কত আছে আর নেতাকর্মী কত আছে! তারমানে ‘ঢাল নাই, তলোয়ার নাই৷ নিধিরাম সর্দার। নিধিরাম সর্দার তো আপনি (এমপি) নিজেই। ঢাল নাই আপনার, তলোয়ার নাই।
এ সময় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য ব্যারিষ্টার খন্দকার রেজা-ই রাকিব, প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য কাজী এটিএম আনিছুর রহমান বুলবুল, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল কালাম সিদ্দিকী (মঈন সিদ্দিকী) সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওর্য়াড হতে আগত নেতৃত্ব ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী প্রমুখ।