দুই বন্ধু ট্রেন থামিয়ে বাচিয়েছেন হাজারো প্রান

186

স্টাফ রিপোর্টারঃ

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গার দুই বন্ধু বলরাম রাজবংশী ও নায়েব আলী। বলরাম রাজবংশী কাজ করেন মাছের আড়তে আর তার বন্ধু নায়েব আলী ডেকোরেটরের  ব্যবসা করেন। তাদের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের ফটিকজানি ও ভাষানি এলাকায়। এই দুই বন্ধুর উপস্থিত বুদ্ধিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি। গত রবিবার (২০ আগস্ট)ভোরে কালিহাতী উপজেলার পৌলী নদীর উপর  রেলসেতুর দক্ষিণ অংশের সংযোগস্থলের প্রায় ৩০ ফুট এলাকাজুড়ে মাটি সরে গিয়ে প্রায় ২০ ফুট গভীর খাদের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে বলরাম রাজবংশীর বাড়ি। প্রতিদিনের মতো রবিবার ভোররাতে মাছের আড়তে যাওয়ার সময় সে ঘটনাটি দেখতে পায়। বিপদ আঁচ করতে পেরে সঙ্গে সঙ্গেই তার বন্ধু নায়েব আলীকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বলে। বন্ধুর ফোন পেয়েই ছুটে আসেন নায়েব আলী।

রেললাইনের পাশে বাড়ি থাকায়  তাদের ট্রেনের সময়সূচি প্রায় মুখস্থ । অল্প কিছুক্ষনের মধ্যে একটি ট্রেন এখান  যাবে জেনে এক দৌঁড়ে বাড়িতে গিয়ে নায়েব আলী তার ভাবীর একটি লাল ওড়না নিয়ে আসেন। এসময় নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার উদ্দেশে দ্রুত বেগে ছুটে আসছিলো। একটি বাঁশের আগায় সেটি বেধে দ্রুত রেল লাইনের পাশে গিয়ে দাঁড়ান তারা। ট্রেনের চালক বিপদ সংকেত দেখে ট্রেন থামিয়ে দেন। এত  বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি।

এ বিষয়ে বলরাম রাজবংশী বলেন,  এই রেল লাইন  দিয়েই প্রতিদিন মাছের আড়তে যাই। রবিবার ভোরে রেলসেতুটির কাছে গেলে দেখতে পাই দক্ষিণ পাশের মাটি সরে বিরাট গর্তের সৃস্টি হয়েছে। বিষয়টি দেখেই আমি বন্ধু নায়েব আলীকে ফোনে জানাই। সেই সঙ্গে স্থানীয় লোকজনকেও ফোন করতে থাকি।’

রাজংশীর বন্ধু নায়েব আলী বলেন,  বন্ধু বলরামের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি দক্ষিণ পাশে বড় গর্ত। একটু পরেই একটা ট্রেন এ রাস্তা দিয়েই যাবে মনে হতেই দৌঁড়ে বাড়ি গিয়ে আমার ভাবীর একটা লাল ওড়না নিয়ে আসি। সেটি ছোট একটি বাঁশের মাথায় বেঁধে রেল লাইনে এসে নারতে থাকি।। কিছুক্ষণের মধ্যেই  নীলসাগর ট্রেনটি দ্রুতবেগে চলে আসে। তখন লাল সংকেত দেখে ট্রেনের চালক ট্রেন থামিয়ে দেয়।’

এবিষয়ে স্থনীযরা বলেন,‘দুই বন্ধু যে কাজটি করেছে তা মহৎ একটি কাজ।  ট্রেনটি যদি ওই ভাংগা  স্থান দিয়ে যেত তাহলে  বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেত। হতাহত হতো হাজারো মানুষ। নায়েব আলী এবং বলরামের বুদ্ধিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।  রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তাদের পুরষ্কৃত করা উচিৎ।