তামাকমুক্ত দিবসেও ভূঞাপুরে তামাকের চালান যাচ্ছে মহাজনের ঘরে
জুলিয়া পারভেজ, ভূঞাপুর ॥
৩১ মে তামাকমুক্ত দিবস। ফুসফুসে ক্যান্সার থেকে শুরু করে অনেক রোগের জন্মদাতা তামাক। সারা বিশ্ব যেখানে তামাকমুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ঠিক সেই মুহুর্তে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের উর্বর চরাঞ্চলে তামাক চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে এক শ্রেণির মুনাফালোভীরা। ভূঞাপুরের চরাঞ্চল যমুনার পলি বিধৌত কৃষি জমি ফসল চাষের জন্য অত্যন্ত উর্বর। এসব এলাকার সহজ সরল কৃষকদের অধিক মুনাফা লাভের প্রলোভনে ধান চাষের পরিবর্তে তামাক চাষে প্রলুব্ধ করছে মুনাফা লোভীর দল।
বুধবার (৩১ মে) তামাকমুক্ত দিবসে ভূঞাপুরের চরাঞ্চলের তামাক কালিহাতী উপজেলার জোকারচর মোকামে নিয়ে যাচ্ছে বলে ভ্যান চালক বাদশা, মোকাদ্দেছ ও ফটিক মিঞা টিনিউজকে জানান। তারা টিনিউজকে আরও বলেন, ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ও অর্জুনা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের তামাক তারা কালিহাতীর জোকারচর মোকামে নিয়ে যাচ্ছেন। তামাক ব্যবসায়ীরা তামাক চাষের আগেই দাদন হিসেবে উচ্চ সুদে চাহিদা মাফিক টাকা সরবরাহ করে থাকেন। তাতে অগ্রীম টাকা প্রাপ্তির লোভে কৃষকরা ধান চাষের পরিবর্তে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে অধিক মাত্রায়।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান টিনিউজকে বলেন, উপজেলার প্রায় ২৬ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হচ্ছে। কিছু ধনী চাষিরা তাদের দীর্ঘদিন পানি জমে থাকে এমন জমিগুলি অধিক মুনাফার আশায় তামাক ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে তামাক চাষে উৎসাহিত হতো। কিন্তু আমরা কৃষকদের সরিষা, কলাই, ভূট্টা, চিনাবাদাম ইত্যাদি চাষে উৎসাহিত করছি। আমরা কৃষি অধিদপ্তরের মাধ্যমে আগামী দু-এক বছরের মধ্যে তামাক চাষ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারবো বলে বিশ্বাস করি। ভূঞাপুর কৃষি অধিদপ্তর এ লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে আমরা সরকারি কিছু প্রনোদনা পাই তা দিয়ে আমরা কৃষকদের সহায়তা করে যাচ্ছি।
ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন টিনিউজকে বলেন, ভূঞাপুরে তামাক চাষ হয় না বলে দাবী করলেও পরে কৃষি অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যের কথা জানালে তিনি প্রথমে মন্তব্য করেন তামাকও একটা অর্থকরী ফসল এটার চাষ হতেই পারে। পরে কৃষি অধিপ্তরদের তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করার পদক্ষেপের কথা স্মরণ করালে তিনি বলেন, আমি ভূঞাপুরে নতুন এসেছি। তামাক অর্থকরী ফসল হলেও যেহেতু স্বাস্থ্য ঝুকি আছে, সেহেতু তামাক চাষের পরিবর্তে অন্য অনেক লাভজনক ফসলের চাষ করা দেশ এবং কৃষির জন্য মঙ্গলময়।