টাঙ্গাইল মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে দুর্ধর্ষ চুরি ॥ ৬নং ওয়ার্ডে অপরাধ বৃদ্ধি
স্টাফ রিপোর্টার ॥
নিরাপত্তা প্রহরী না থাকায় টাঙ্গাইল শহরের প্যারাডাইসপাড়া খালপাড় এলাকায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ভবনে দুর্ধষ চুরি হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ধারণা গত কয়েক দিন যাবত চোর চক্রটি কমপ্লেক্সের ভিতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ফজলুল হক বীর প্রতিক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারি কমিশনার মারিয়াম খাতুন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নিচ তলার পূর্ব পাশের কাঠের দরজা কেটে কেচিগেট এবং গ্লাসের দরজার দুটি তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। ৪৫টি চেয়ার, ৫টি টেবিল, একটি প্রজেক্টর, ৩টি বিদ্যুতিক ফ্যান, একটি পানির মোটর ও ২৭টি পানির কল চুরি করে নিয়ে যায়।
এদিকে টাঙ্গাইল পৌর শহরের ৬নং ওর্য়াডে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। শহরের কলেজ পাড়া, প্যারাডাইস পাড়া, খালপাড়, আমঘাট রোড, পানির ট্যাঙ্কি মোড় এলাকায় অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতিপূর্বে এসব এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ কম ছিল। কিন্তু গত ৩/৪ মাস ধরে পৌর শহরের এই এলাকাগুলোতে বেশী অপরাধ প্রবণ এলাকায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে সিএনজি, অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেলের স্ট্যান্ড। আর এসব অবৈধভাগে গড়ে উঠা স্ট্যান্ডকে কেন্দ্র করেই আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা চরম বিপাকে পড়েছে। প্রায় প্রতি রাতেই বাসা বাড়িতে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। গত (১৩ এপ্রিল) রাতে প্যারাডাউস পাড়ায় এক বাসার কলাপসেবল গেটের তালা ভেঙে একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্ট্যান্ডের কারণে এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের উৎপাত কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কারণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কাউন্সিলরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযোগ করার পরও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না স্থানীয় বাসিন্দারা।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি টিনিউজকে বলেন, বিগত ২০১৮ সালের (৭ আগস্ট) মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক কমপ্লেক্সটি উদ্বোধন করেন। ওই সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কোন কমিটি না থাকায় জেলা প্রশাসক কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সময় পর্যন্ত জেলা প্রশাসকই দায়িত্ব পালন করছেন। উদ্বোধনের পর থেকে নিরাপত্তা প্রহরী না থাকায় কমপ্লেক্সটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ফজলুল হক বীর প্রতিক টিনিউজকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ট সন্তান। তাদের দেয়া সরকারের সহযোগিতা সামগ্রী এভাবে চুরি হওয়া মেনে নেওয়া যায় না। গত কয়েক দিন যাবত সংঘবদ্ধ চোরেরা চুরি করে আসছে। এক দিনে চুরি করা কখনও সম্ভব হয়নি। এটি একটি ন্যাক্কার জনক ঘটনা। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তিসহ মালামাল উদ্ধারের দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম টিনিউজকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হবে। এই এলাকায় অপরাধ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, এমন খবর আমরা পেয়েছি। চুরির ঘটনা পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তকে শনাক্ত করা হবে।
Comments are closed.