টাঙ্গাইল জেলা সদরের রাস্তার বেহাল দশা ॥ দুর্ভোগ চরমে

189

স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল শহরের জেলা সদর সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়েই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, আদালত চত্বরসহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতে যেতে হয়। অপরদিকে এ সড়ক দিয়েই নিরালা মোড়সহ শহরের দক্ষিণ দিকে যাতায়াত করতে হয়। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। অনেক জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমাসহ সড়ক কর্দমাক্ত হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীদের।
সম্প্রতি জেলা সদর সড়কের ঢাকা ক্লিনিক সংলগ্ন জায়গায় সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। রাস্তায় সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ রেখে দুইপাশের ড্রেন ভেঙে নতুন করে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। অথচ এই ড্রেনটিও খুব বেশিদিন আগের নয়। ড্রেনের উপর দিয়ে পথচারীদের চলাচলের উপযোগী করে বিশেষ ধরণের টাইলসও করা হয়। বর্তমান পৌর পরিষদ আবার রাস্তা প্রশস্ত করতে গিয়ে ড্রেন ভেঙে নতুন করে করা হয় সেই ড্রেন। তার আগে সড়কের পাশের দখল হওয়া জায়গা উদ্ধার করতে স্থাপনাও ভাঙা হয়। অপরিকল্পিতভাবে সংস্কার কাজের কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পথচারীদের মধ্যে দেখা দেয় চরম ক্ষোভ। তারা বলেন, ভবিষ্যতে যে রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে, সেই চিন্তা কেন পৌর কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনাবিদদের ছিল না? আগেই কেন দখল উদ্ধার করা হয়নি? তাহলে ড্রেন করতে যে বরাদ্দ ছিল তা কি অপচয় হতো না? ভবিষ্যতের পরিকল্পনা আগে থেকে নেওয়া থাকলে এখন জনগণের এ রকম দুর্ভোগ হতো না।




বিভিন্ন সড়কে সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের প্রধান প্রধান সড়কের বিভিন্ন অংশে কাপেটিং ওঠে গেছে। অনেক রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাতায়াতকারীদের। স্থানীয়রা বলছেন, জেলার প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার যদি এই অবস্থা হয় তাহলে অন্য পৌরসভাগুলোর কি হবে। আমরা প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় ভ্যাট, ট্যাক্স দিলেও ঠিকমতো পৌরসভারও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। রিকশাচালক খালেক মিয়া টিনিউজকে বলেন, বিগত বছরের চেয়ে বর্তমানে শহরের রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। বৃষ্টি নামলে সেই দুর্ভোগ আরও তীব্র হয়। বিশেষ করে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। এতে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক করিম মিয়া টিনিউজকে বলেন, রাস্তা ভাঙচুরের কারণে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে। অপরদিকে অটো ও রিকশাগুলো বেয়ারিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তা ভাঙাচুরের কারণে অনেক যাত্রীই এসব সড়ক দিয়ে আসতে চান না। গৃহিনী শাম্মি আক্তার নামের একজন পথচারী টিনিউজকে বলেন, বর্তমানে শহরের রাস্তা দিয়ে হাঁটাও দুষ্কর। রাস্তা ভাঙাচুরের কারণে অনেক রিকশা ও অটোরিকশার চালকরা যেতে চান না। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে এসব ভাঙা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এক প্রকার বাধ্য হয়েই আমাদের যাতায়াত করতে হয়।




এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সিরাজুল হক আলমগীর মুঠোফোনে টিনিউজকে বলেন, নিরালা মোড় থেকে ডিসট্রিক্ট পর্যন্ত নতুন ড্রেনে করে রাস্তা সংস্কার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কাজের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কারণে রাস্তা সংস্কার ও ড্রেনের সংস্কার কাজে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কোনো প্রতিবন্ধকতা না হলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই রাস্তায় জলাবদ্ধতা দূর করা হবে। তিনি আরও বলেন, রাস্তার দুই পাশে উন্নতকরণ, ড্রেন সংস্কার এবং লাইটিংসহ এই তিন প্রজেক্ট নিয়ে মোট ১৪ কোটি টাকার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। এই সব কিছুই আধুনিক মডেলে করা হবে।