টাঙ্গাইল ও সখীপুরে করোনার উপসর্গ নিয়ে শিক্ষকসহ ২ জনের মৃত্যু

0 286

নোমান আব্দুল্লাহ/ মোস্তফা কামাল, সখীপুর ॥
টাঙ্গাইল ও সখীপুরে পৃথকস্থানে করেনার উপসর্গ নিয়ে শিক্ষকসহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৮ এপ্রিল) রাতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা এবং সখীপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলো- টাঙ্গাইল পৌর শহরের বিশ্বাস বেতকা আমিন বাজার এলাকার মৃত আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে শাহ আলম (৪৫) এবং সখীপুর উপজেলার বড় হামিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামসুল হক (৫০)। এ ঘটনার পর ওই বাড়িসহ আশপাশের মোট ৫টি বাড়ি লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম টিনিউজকে জানান, কয়েকদিন ধরে তিনি ঠান্ডা জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। পাশাপাশি তার হাপানির সমস্যা ছিল। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তাকে ঢাকায় কুরমিটোলা হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পরে এ্যাম্বুলেন্স উঠানোর সময়ই তার মৃত্যু হয়।
টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা আমিন বাজার এলাকার করোনার উপসর্গ নিয়ে শাহ আলম (৪২) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নিহত শাহ আলম মৃত আব্দুস সামাদ মিয়ার ছেলে। তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড টাঙ্গাইল জেলা শাখার সদস্য ছিলেন। স্থানীয় এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে তিনি ঠান্ডা জ্বর এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। পাশাপাশি তার হাপানির সমস্যা ছিল। হঠাৎ করে বুধবার (৮ এপ্রিল) রাতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে ঢাকায় কুরমিটোলা হাসপাতালে রেফার্ড করেন কর্ত্যবরত চিকিৎসক। পরে এ্যাম্বুলেন্স উঠানোর সময়ই তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, সখীপুর উপজেলায় জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বড় হামিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শামসুল হকের (৫০) মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের দিঘীরচালা গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। গত দু-তিন দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হতে বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) সকালে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার (আইইসিডিআর) পাঠানো হয়েছে। তবে ওই গ্রামের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। এ ঘটনায় মৃত ব্যক্তির বাড়ির লোকজনদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নির্দেশ দিয়েছেন।
সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সোবহান টিনিউজকে জানান, ওই শিক্ষক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হতে স্থানীয়ভাবে মৃত ব্যক্তির শরীরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকার আইইসিডিআরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ওই বাড়ির সব লোকজনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ওই শিক্ষকের আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট ছিল। দু-তিন দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। মৃত্যুর আগে তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়ে গিয়েছিল। বুধবার (৮ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে ওই রাতেই ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সখীপুর থানার পুলিশ ওই বাড়িতে যান।
উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ টিনিউজকে বলেন, এ ঘটনায় ওই গ্রামের মানুষদের মধ্যে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসন ওই গ্রামকে লকডাউন ঘোষণা না করলেও স্থানীয়রাই ওই গ্রামকে লকডাউন ঘোষণা করেছে।
সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমাউল হুসনা লিজা টিনিউজকে জানান, নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল না আসা পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাবে না।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

ব্রেকিং নিউজঃ