টাঙ্গাইল এখন করোনা ভাইরাসের হটস্পটে পরিণত ॥ এ পর্যন্ত মৃত্যু ১৪৬ জন

335

এম কবির ॥
টাঙ্গাইলে গত ২৪ ঘন্টায় বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) নতুন করে ২৫৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের । এর মধ্যে ৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে আর ৪ জন উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। এখন পর্যন্ত জেলায় মোট ৯৫৭৫ জনের দেহে করোনার ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় মোট ১৪৬ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে ১২৮, মির্জাপুরে ২১, মধুপুরে ১৯, কালিহাতীতে ১৮, ঘাটাইলে ১৮, দেলদুয়ারে ১৭, গোপালপুরে ১২, সখিপুরে ৭, নাগরপুরে ৭ ও ভূঞাপুরে ৭ জন রয়েছেন। করোনা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলা থেকে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজার ১৬২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৬৪৬ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে দ্বিতীয় দফা ও বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে সারাদেশসহ টাঙ্গাইলে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। বুধবার (২১ এপ্রিল) থেকে আবারো কঠোর লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) থেকে আবারো লকডাউন বৃদ্ধি করা হয় বৃহস্পতিবার (৬ মে) থেকে আবারো লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়, রবিবার (১৬ মে) থেকে আবারো লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়, সোমবার (২৪ মে) থেকে আবারো লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়, সোমবার (৩১ মে) থেকে আবারো লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়, সোমবার (৭ জুন) থেকে আবারো লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে আবারো কঠোর লকডাউন বৃদ্ধি করা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে লকডাউনের ৯৫তম দিন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫৩৬৪ জন।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান টিনিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলায় ৯৫৭৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল সদরে ৪২৭৮, মির্জাপুরে ৯৩৫, কালিহাতীতে ৯২১, ঘাটাইলে ৬২৩, মধুপুরে ৪৭৭, দেলদুয়ারে ৪৬৪, সখীপুরে ৪৪৯, ভূঞাপুরে ৩৮১, গোপালপুরে ৩৫০, ধনবাড়ীতে ২৬২, বাসাইলে ২৪৫ ও নাগরপুরে ১৯০ জন রয়েছে। জেলার হাসপাতাল গুলোতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১২১ জন। এদের মধ্যে টাঙ্গাইল জেনালের হাসপাতালে ৮১ জন, কালিহাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ জন, মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১জন, ঘাটাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১জন, গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ জন, নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন এবং মির্জাপুুর কুমুদিনী হাসপাতালে ৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৫০৫৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। মোট কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৫৯০৭ জন।
গত বছরের (৮ এপ্রিল) জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। জেলায় গত বছরের এপ্রিল মাসে ২৪ জন, মে মাসে ১৪১ জন, জুন মাসে ৪৪৭ জন, জুলাই মাসে ১০২৬ জন, আগস্ট মাসে ৯৬৪, সেপ্টেম্বর মাসে ৫২৯, অক্টোবর মাসে ১৫২, নভেম্বর মাসে ২০৫, ডিসেম্বরে ২১৮, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১৩৪, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ পর্যন্ত ২৭১ জন, এপ্রিল পর্যন্ত ৫৭৬ জন, মে পর্যন্ত ৩২৯ জন, জুন পর্যন্ত ২৬৯১ জন, এখন (৮ জুলাই) পর্যন্ত ১৮১৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মাস ভিত্তিক আবারও করোনায় আক্রান্ত সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
টাঙ্গাইল সিভিল সার্জন অফিস সূত্র টিনিউজকে জানায়, ৭ ফেব্রুয়ারি সকালে টাঙ্গাইলে ১২টি উপজেলায় একযোগে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। বুধবার (১৬ জুন) করোনার টিকার তৃতীয় চালান জেলায় আসে। এ চালানে ১৫ হাজার ৬০০ ডোজ চীনের টিকা এসেছে। জেলার মোট ৪২টি কেন্দ্রে টিকা প্রদান কার্যক্রম চালু রয়েছে। শনিবার (১৯ জুন) থেকে আবার করোনার টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। বুধবার (৭ এপ্রিল) করোনার টিকার দ্বিতীয় চালান জেলায় আসে। বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) থেকে করোনার টিকার ২য় ডোজ দেয়া শুরু হয়। গত (৪ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দফায় টাঙ্গাইলে ১ লাখ ২০ হাজার ডোজ করোনা ভ্যাকসিন আসে। করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, সরকারি অন্যান্য সংস্থার সম্মুখসারির কর্মী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, সরকারের অত্যাবর্শক্রীয় অন্যান্য এজেন্সির সদস্যরা করোনার টিকা পাবেন। পর্যায়ক্রমে ১৮ বছরের উপরে সকলেই টিকা পাবেন। ১৮ বছরের নিচে, গর্ভবতী মা ও দুগ্ধদানকারী, গুরুত্বর অসুস্থ ও হাসপাতালে ভর্তিকৃত ব্যক্তিরা টিকা পাবেন না। টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ৯টি কেন্দ্র এবং ১১টি উপজেলার প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনটি করে বুথ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতি বুথে দুইজন করে টিকাদান কর্মী ও চারজন স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন।

 

 

Comments are closed.

ব্রেকিং নিউজঃ