টাঙ্গাইলে যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

246

হাসান সিকদার ॥
উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতের ফলে টাঙ্গাইলে যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে টাঙ্গাইলে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে ।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম। তিনি টিনিউজকে জানান, গত ২৪ ঘস্টায় যমুনা, ধলেশ্বরী ও ঝিনাইসহ অন্যান্য শাখা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৪১ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর পানি এলাসিন পয়েন্টে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার এবং ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি টিনিউজকে আরও জানান, যমুনাসহ জেলার বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া বিভিন্ন গ্রামে দেখা দিয়েছে ভাঙন। পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন নিরুপন করা সম্ভব হচ্ছে না। পানি কমে গেলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়রা টিনিউজকে জানায়, পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনার অর্ধশতাধিক চরাঞ্চলসহ টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভূঞাপুর, মির্জাপুর, বাসাইল ও নাগরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন গ্রাম বন্যার কবলে পড়ছে। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে অব্যাহত আছে নদী ভাঙ্গন। ভাঙনের ফলে টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, ভূঞাপুর ও বাসাইলের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের শতাধিক বসতভিটা, মসজিদ, বাঁধসহ নানা স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলেও ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে জরুরি কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগিরা। এদিকে নদী তীরবর্তী এলকায় ঘরবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় অনেকেই গবাদিপশুসহ উঁচু সড়কে আশ্রয় নিয়েছেন। বসতভিটায় পানি উঠায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটের মধ্যে পড়েছেন বন্যা দুর্গতরা। এ পরিস্থিতিতেও এখন পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি কোন সহযোগীতা পাননি বলে অভিযোগ এই বানবাসিদের। অপরদিকে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে আমনের ক্ষতি হবার শঙ্কা করছেন কৃষি বিভাগ।
ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ভালকুটিয়া গ্রামের রহম, রফিক, আব্দুলসহ কয়েকজন অভিযোগ করে টিনিউজকে বলেন, ভাঙনের কবলে পরে আমাদের এলাকার শত শত বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। এখন মসজিদটিও যাওয়ার পর্যায়ে এসেছে। এ স্বত্বেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ এই ভাঙনরোধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ কারণে নিজেরাই বস্তায় মাটি ভরে মসজিদটির ভাঙন ঢেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ ব্যাপারে কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হযরত আলী তালুকদার টিনিউজকে বলেন, চলতি বন্যায় আমার ইউনিয়নের আলীপুরসহ আশেপাশের এলাকার প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি যমুনায় বিলীন হয়েছে। এছাড়াও শত শত ঘরবাড়ি হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙন এখনো অব্যাহত রয়েছে।