টাঙ্গাইলে বিদ্যুৎ প্রি-পেইড মিটার রিচার্জে ২২০ ডিজিটের সংখ্যা ॥ গ্রাহকের দুর্ভোগ চরমে

0 85

স্টাফ রিপোর্টার ॥
মোস্তাফিজুর রহমান, পেশায় ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন ধরে নিজ গ্রামের বাড়ি ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ প্রি-পেইড মিটার ব্যবহার করছেন। তাছাড়া ব্যবসায়ী হিসেবে তার কাছে প্রি-পেইডের অসংখ্য গ্রাহক সেবা নেন। কয়েকদিন আগে প্রি-পেইড মিটারের টাকা শেষ হয় তার। পরে স্থানীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ থেকে প্রি-পেইড মিটারের জন্য ৫০০ টাকা রিচার্জ করেন। তখন দেখতে পান নতুন করে ২২০ ডিজিট সংখ্যার লম্বা এক টোকেন সিরিয়াল নাম্বার। এরপর বাড়ি ফিরে ওই ২২০ ডিজিটের টোকেন নম্বর তার প্রি-পেইড মিটারের বাটন চাপতে থাকেন। এছাড়া বানিজ্যিক মিটারে ১২০ ডিজিটের টোকেন নম্বর প্রবেশ করাতে হয়। হঠাৎ করে একটি সংখ্যা ভুল হয়। তখনি ঘটে বিপত্তি। পরপর ২-৩ বার চেষ্টা করার পর সঠিক ডিজিট তুলে মিটারে টাকা রিচার্জে সক্ষম হন।




এতে তার কমপক্ষে আধা ঘন্টা সময় লেগে যায়। আগে যেখানে মাত্র ২০ ডিজিটের সংখ্যা উঠাতে সময় লাগতো এক থেকে দুই মিনিট। এখন ১০ গুণ ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ গ্রাহকদের। টাঙ্গাইলের আদালত পাড়া এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী প্রি-পেইড মিটার গ্রাহক মোস্তাফিজুর রহমান তার ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন। তিনিসহ অন্যান্য গ্রাহকরা টিনিউজকে জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর প্রি-পেইড মিটার ব্যবহার করে আসছি। আগে কখনো এমন ভোগান্তির শিকারে পড়েনি। ২০ ডিজিটের পরিবর্তে ২২০ ডিজিটের সংখ্যা উঠানো অনেক ঝামেলা। একটি সংখ্যা ভুল হলেই পুণরায় উঠাতে হয়। শহরের সাবালিয়া এলাকার বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী প্রি-পেইড মিটার গ্রাহকরা টিনিউজকে জানান, শুনেছি বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির কারণে প্রি-পেইড মিটার আপডেট করা হয়েছে। যার ফলে অতিরিক্ত ২২০ ডিজিট। এখন কথা হলো, অনেকেই ২২০ ডিজিট কীভাবে মিটারে উঠাবে সে নিয়মই জানেন না। আবার জানলেও ভুল করে বসেন টোকেন নাম্বার উঠাতে। তাছাড়া বিদ্যুত অফিস থেকে যে টোকেন দেয়া হয় সেগুলোর লেখাও খুব ছোট এবং হ-য-ব-র-ল অবস্থা।




মনে হচ্ছে, এটা ডিজিটাল এক ভোগান্তি ও গ্রাহকদের গলার কাঁটা। কলেজ পাড়া এলাকার প্রি-পেইড গ্রাহক গৃহিনী মনোয়ারা পারভীন টিনিউজকে জানান, প্রি-পেইড মিটার লাগানোর শুরু থেকেই ঝামেলা ও বিরক্তিকর। ২০ ডিজিটের পরিবর্তে নতুন করে ২২০ ডিজিটের টোকেন নাম্বার উঠাতে গিয়ে কয়েকবার ভোগান্তিতে পড়েছি। টোকেন নাম্বার উঠানো শেষে মিটারে টাকা দেখালেও ঘরে বিদ্যুৎ যায়নি। পরে কয়েকজনের কাছে বিষয়টি বললে তারা জানায় মিটারে লক পড়েছে। এ নিয়ে লক ছাড়াতে বিদ্যুৎ অফিসে গেলেও অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল শহর ফিডারে প্রায় ৮৩ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক প্রি-পেইড মিটার ব্যবহার করছেন। প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকরাই এই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।




এ বিষয়ে টাঙ্গাইল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার কামরুজ্জামান টিনিউজকে জানান, যখন বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি হয় তখন অটোমেটিকভাবে এ প্রি-পেইড মিটারে অতিরিক্ত ডিজিট যোগ হয়। এটি একবারই হবে। পুণরায় মূল্যবৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আগের ২০ ডিজিটি থাকবে। আবাসিকে ২২০ ডিজিট ও বানিজ্যিকে ১২০ ডিজিটের টোকেন নাম্বার উঠাতে যাতে কোনো সমস্যায় না পড়তে হয় সে লক্ষ্যে গ্রাহকদের বাসা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.

ব্রেকিং নিউজঃ