টাঙ্গাইলে প্রায় ৪ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ নাইন স্টার সঞ্চয় সমিতির বিরুদ্ধে
স্টাফ রিপোর্টার ॥
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ছিলিমপুর ইউনিয়নের শাহানশাহগঞ্জ (বরুহা) বাজার থেকে গ্রাহকের প্রায় ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে নাইন স্টার সঞ্চয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সে পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের খারজানা গ্রামের মিয়া চানের ছেলে। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া মহল্লার প্রায় ৪০০ সহজ সরল মানুষ ও গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতারণার ফাঁদ পেতে সঞ্চয়ের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ‘নাইন স্টার সমবায় সঞ্চয় সমিতি’ নামে বেসরকারি এনজিওর সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া ও বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের নিরীহ মানুষগুলোর কাছ থেকে এ টাকা আদায় করেন তারা। এখন সেই সমিতির দরজায় তালা ঝুলছে। এর পর থেকেই ভুক্তভোগী গ্রাহকরা টাকার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সমিতির গ্রাহকরা এ বিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান, উপজেলা ও জেলা সমবায় অফিস, সদর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। এছাড়াও তারা কোর্টে এ বিষয়ে একটি মামলাও দায়ের করেন।
গত মার্চ মাসের ২ তারিখে পালিয়ে যায় সে। এতে পথে বসার উপক্রম হয়েছে শত শত পরিবার। সদর উপজেলার পোড়াবাড়ি ও সিলিমপুর ইউনিয়নের নিরীহ বাসিন্দাদের নিঃস্ব করেছে এই “নাইন স্টার” যার সমবায় অধিদপ্তর থেকে নেয়া রেজিস্ট্রেশন নং-২৮৪। এরই ধারা বাহিকতায় গত সোমবার (১লা মে) “নাইন স্টার” এনজিও’র মীর ইয়াছিন নামে এক পার্টনারকে ধরে দোকানের ভিতর তালাবদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা ও গ্রাহকেরা।
সরজমিনে জানা যায়, নাইন স্টার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর মালিক ৬ জন। তারা হলেন, সমিতির সভাপতি সিলিমপুর ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে শফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি একই এলাকার শাজাহান আলীর ছেলে হযরত আলী, সাধারণ সম্পাদক খারজান এলাকার মিয়া চানের ছেলে শফিকুর ইসলাম, সদস্য বরুহা এলাকার আব্দুর খালেকের ছেলে আমগীর, মীর সাবের আলীর ছেলে মীর ইয়াসিন আলী, খারজান এলাকার আব্দুল সাত্তার আলীর ছেলে ফজলু মিয়া। তারা বিগত ২০১৮ সালে সিলিমপুর ইউনিয়নের শাহানশাহগঞ্জ বাজারে ঋণ বিতরণ ও সঞ্চয় করার জন্য এই সমিতি চালু করে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে এই সমিতিতে রখেছিলাম। কিন্তু গত দুই মাস যাবৎ মালিকদের কোন খোজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমার সব জায়গায় ঘুরেও আমাদের টাকা ফেরত পাচ্ছি না। ৪-৫ বার এ নিয়ে সালিশ হলেও কোন শুরাহা হচ্ছে না।
এদিকে জিরাতন বেওয়া যিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সারা জিবনের ১লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ওই এনজিওতে ডিপোজিট করে রেখেছিলো, আয়মনা বেগম তিনিও ভিক্ষা করে জমানো ১লাখ ৮০ হাজার টাকা রেখেছিলো, এভাবে কালু, ছালাম, সাহাদত, মনি, লালভানু’সহ অসংখ্য গ্রাহক প্রতারিত হয়ে আজ তারা দিশেহারা। সংবাদ পাওয়ার পর এদের কেউ কেউ স্ট্রক করে সদর হাসপাতলে চিকিৎসা নিয়েছে।
এ বিষয়ে সিলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজায়েত মোল্লা জানান, এ বিষয় নিয়ে একাধিক বার মালিকদের নিয়ে বসা হয়েছে। কিন্তু সমিতির সাধারণ সম্পাদক পলাতক হওয়ায় কোন সমাধান করা যাচ্ছে না। আজ সোমবার (১৫ মে) অন্য সকল মালিকদের নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, আগামী ২৪ মে এর মধ্যে তারা সাধারণ সম্পাদককে হাজির করবে। তখন একটা সমাধান করা যাবে বলে আশা রাখি।