টাঙ্গাইলে ঐতিহ্যের মৃৎ শিল্প ধরে রেখেছে এলাসিন কুমার পাড়া

0 121

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী ॥
সভ্যতার উৎকর্ষতা ও দিন দিন আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অংশ মৃৎশিল্প। বর্তমানে বাজারে প্লাস্টিক সামগ্রীর বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্রের ভীড়ে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশের মৃৎশিল্প। সেই সাথে প্রায় হারিয়ে গেছে মাটির তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজানো গ্রামীণ সংস্কৃতির নানা উপকরণ ও গৃহস্থলীর নানান প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান।




একসময় এদেশীয় সংস্কৃতিতে মাটির তৈরি জিনিসপত্রের যথেষ্ট ব্যবহার ও কদর ছিলো। মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থলি ব্যবহার্য জিনিসপত্রের চাহিদা মেটাতো এই মৃৎশিল্প। সহজলভ্য এই শিল্প আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। পূঁজির অভাবে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে দেলদুয়ার উপজেলার কুমার পাড়ায় গড়ে উঠা মৃৎশিল্প। এমন এক সময় ছিল যখন বাংলার ঘরে ঘরে মাটির তৈরির হাড়ি পাতিল, কলসি, থালা, বাটি, ফুলের টব, ফুলদানি, পয়সা জমানোর ব্যাংক, খাবার টেবিল, খেলনা, সৌখিন সামগ্রীসহ নানা জিনিসপত্রের ব্যবহার হতো।




মৃৎশিল্পের বিভিন্ন উপাদানে গ্রামীণ বাংলার মানুষের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখের রোমাঞ্চকর অনুভূতি, প্রেম-বিরহের নানা দৃশ্যপট, মনোমুগ্ধকর ছবি নরম হাতের স্পর্শে ফুটিয়ে তুলতেন শিল্পীরা। মৃৎশিল্পীরা এই শিল্পের উপর ভিত্তি করে একসময় শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত গড়ে তোলে। তৎকালীন সময়ে দেশের অর্থনৈতিক বাজার চাঙ্গা রাখতে মৃৎশিল্পের কোন বিকল্পই ছিলনা। তবে বর্তমান দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিক, স্টিল, ম্যালামাইন, চিনামাটি, সিলভারসহ বিভিন্ন ধরনের ধাতব পদার্থের তৈরি হাড়ি-পতিল, খেলনা, সৌখিন জিনিসপত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বিলুপ্তির মুখে প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।




এ পেশায় জড়িতরা ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও পর্যাপ্ত পূঁজির অভাবে অনেক শিল্পী বাপ-দাদার রেখে যাওয়া এই শিল্পকে ছেড়ে ভিন্ন পেশা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার অনেকে পেশার বাইরে কোন কাজ করতে না পেরে এখনো মৃৎশিল্পে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে। এ পেশায় ভর করে অভাব অনটনের সংসারের ঘানি টানতে হচ্ছে কোন রকমে।

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.

ব্রেকিং নিউজঃ