টাঙ্গাইলের বাজারে চাল, আটার দর স্থিতিশীল ॥ দাম বেড়েছে পেঁয়াজের
স্টাফ রিপোর্টার ॥
একদিনের ব্যবধানে ১০-১৫ টাকা দাম বেড়ে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। অভিযোগ রয়েছে, ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকার সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। চাল ও আটার দাম স্থিতিশীল থাকলেও বেড়েছে ভোজ্যতেল, আদা ও ডিমের দাম। তবে দাম কিছুটা কমেছে মসুর ডাল, ব্রয়লার মুরগি ও চিনির। কাঁচা মরিচসহ বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে। গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে মাছের। সোমবার (২২ মে) টাঙ্গাইল শহরের পার্ক বাজার, ছয়আনি বাজার, সিটি বাজার বাজার ও আমিন বাজার থেকে নিত্যপণ্যের দর দামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এছাড়া বাজারে বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমদানি অনুমতি প্রদানে কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। এ কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর সুযোগ নিতে পারছে। সামনে কোরবানির ঈদ রয়েছে। ওই সময় পেঁয়াজসহ সব ধরনের মসলাপাতির বাড়তি চাহিদা তৈরি হবে। কিন্তু এবার কোরবানির আগেই পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ছে। এ অবস্থায় দ্রুত পেঁয়াজ আমদানির কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
পার্ক বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা ফয়সাল মিয়া টিনিউজকে জানান, মোকামগুলোতে পেঁয়াজের আমদানি কম। পাইকারি মার্কেটে ভারতের পেঁয়াজ নেই। বরাবরই দেশী পেঁয়াজের পাশাপাশি আমদানিকৃত পেঁয়াজ বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু আমদানি বন্ধ থাকার কারণে এখন দেশী পেঁয়াজই ভরসা। সামনে আরও দাম বাড়তে পারে এ কারণে এখন কৃষকরাও পেঁয়াজ ছাড়ছে না। এ অবস্থায় সংকট আরও বাড়ছে। দ্রুত আমদানির সুযোগ দেওয়া হলে দাম কমে আসবে। ওই বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনছিলেন আব্দুল আজিজ। তিনি টিনিউজকে জানান, রোজার ঈদের আগে প্রতিকেজি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই পেঁয়াজ এখন ৮৫-৯০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। দ্রুত দাম কমাতে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে, পেঁয়াজের পাশাপাশি আদা, রসুন ও মসলাপাতি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আদা মানভেদে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৪০০ টাকায়। প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকায়। এছাড়া চাল ও আটার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। মোটা জাতের স্বর্ণা ও চায়না ইরি ৪৭-৫০, মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা ৫০-৫৫ এবং সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৬০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আটা খোলা ৫৫-৬০ এবং প্যাকেট আটা ৬২-৬৫, দাম বেড়ে প্রতিলিটার ভোজ্যতেল খোলা ১৮০-১৮৫, প্রতিটি এক লিটারের ক্যান ১৯৯-২০০ এবং পাঁচ লিটারের ক্যান ৯৬০-৯৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। দাম বেড়ে প্রতি ডজন ডিম ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগির। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হলেও আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে চিনির দাম। প্রতিকেজি খোলা চিনি ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম কমে প্রতিকেজি মসুর ডাল ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে দাম বাড়ানোর আভাস দিয়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, সামনে কোরবানি, এ কারণে বাজারে গরু ও খাসির সরবরাহ কমে গেছে। খামার মালিকরা বেশি দামের আশায় গবাদি পশু ধরে রাখছেন। এ কারণে অতিরিক্ত দাম দিয়ে তাদেরকে পশু সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এ কারণে সামনে মাংসের দাম বাড়তে পারে। বাজারে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়। এছাড়া অন্যান্য সবজির দামও চড়া। বেশিরভাগ মাছ বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে।