ঘাটাইলে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কথিত নেতাদের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

83

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী ॥
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কথিত অবৈধ নেতাদের বিরুদ্ধে সমিতির তহবিলের প্রায় ৭২ লাখ টাকা অপচয় ও আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষকবৃন্দ।
রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ঘাটাইল প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন।




সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন অর্চনা পাল, হুমায়ুন কবির, আ. মালেক, আ. রহমান, আয়নাল হক, শাহাদাত হোসেন কামাল, অনুপ আচার্য, আশরাফুল ইসলাম সুজন, আবুবকর সিদ্দিক, দিলোয়ারা বেগম, নজরুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফাসহ অভিযুক্ত কমিটি থেকে পদত্যাগকৃত শিক্ষক আনোয়ার হোসেন সেলিম ও রশিদুল ইসলাম।




সংবাদ সম্মেলনে চতিলা শিমলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্চনা পাল লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘ঘাটাইলে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বর্তমান অবৈধ এডহক কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আতœসাৎ এর বিরুদ্ধে আমরা সাধারণ শিক্ষকগণ বিগত ১৭ জুলাই ২২ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দাখিল করি। অভিযোগ দাখিল করা সত্বেও কোন প্রতিকার না পেয়ে ৪ আগস্ট ২২ সালে সমিতির ভবনের সামনে প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষকের স্বতঃস্ফুর্ত অংশ গ্রহণের মাধ্যমে মানববন্ধন করি। যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারিত হয়।




চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা রবিবার (৫ ফেব্রেুয়ারি) বেলা ১০টায় সমিতির ভবনে এক শান্তিপূর্ণ শিক্ষক সমাবেশ এর আহ্বান করি এবং শিক্ষকদের মাঝে কার্ড, লিফলেট বিতরণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগসহ সরাসরি আমন্ত্রণ জানাই।
কিন্তু বর্তমান অবৈধ এডহক কমিটির সভাপতি এমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান সাধারণ শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ শিক্ষক সমাবেশকে পন্ড করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের আন্দোলনকারী ৪ জন শিক্ষকের নামে থানায় জিডি করেন। যার প্রেক্ষিতে আমরা স্থান পরিবর্তন করে কর্মসূচি নির্বিঘ্নে পালন করার জন্য সমিতির নিচে সমাবেশ এর আয়োজন করে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু করলে প্রশাসন তাতে বাধা প্রদান করে এবং মঞ্চ ভেঙ্গে দিয়ে আমাদের সংগঠন করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।




আমরা আপনাদের মাধ্যমে আন্দোলনকারী শিক্ষক ভাইদের জানাতে চাই আমাদের আজকের কর্মসূচি পুলিশ প্রশাসন দ্বারা বন্ধ করলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। প্রসঙ্গত বলতে চাই, ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৮.০০ দিকে এমরান ও নাজমুল হোসেন এর নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক ও বহিরাগত কিছু লোকজন নিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসে এমরান নিজেকে সভাপতি ও নাজমুল হোসেন নিজেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষনা করে। তারা পূর্বের কমিটির নিকট থেকে কোন দায়িত্বভার বুঝে না নিয়ে স্বেচ্ছাচাতিার মাধ্যমে সমিতি পরিচালনা করে আসছে। বিগত সময়ে তারা সমিতির প্রায় ৭২ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে অপচয় ও আত্মসাৎ করেছেন।’




এ বিষয়ে উপজেলার সাধারণ শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, ঘাটাইল উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি মার্কেট থেকে সমিতির বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় হলেও সে অর্থের সঠিক ব্যবহার হয়না। বরং কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে নামে-বেনামে বিভিন্ন বিল ভাউচার ব্যবহার করে সমিতির বিতর্কিত কমিটির কতিপয় নেতা নামধারী দূর্নীতিবাজ শিক্ষক নিজেদের দাম্ভিকতা দেখিয়ে শিক্ষক সমিতির টাকায় ভোগ বিলাস আর বিপুল সম্পদ গড়ে তুলছেন। ইতিপূর্বে এ বিষয়ে কেউ এককভাবে সাহস করে মুখ না খুললেও এখন সকল সাধারণ শিক্ষক একজোট হয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন।




অভিযুক্ত নেতাদের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খোশনবীশ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঘাটাইল উপজেলায় আমাদের অনুমোদিত কোন কমিটি নেই। অবৈধভাবে সমিতির নাম ভাঙিয়ে নেতা নামধারী কোন অসাধু শিক্ষক যদি অর্থ আত্মসাতসহ কোন প্রকার দূর্নীতি বা অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকে তার দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। এদের দায়ভার বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি বহন করবে না।’

Comments are closed.

ব্রেকিং নিউজঃ