ঘাটাইলে আদেশের দুই বছর পর বিধিলংঘন করে শিক্ষকের বদলী কার্যকর
স্টাফ রিপোর্টার ॥
বিগত ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ঘাটাইল উপজেলায় বদলির আদেশ পান সহকারী শিক্ষক জাহিদা নাসরিন। আদেশের দীর্ঘ দুই বছর পর চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বদলী হলেন তিনি। কিন্তু যে বিধির কারণে এতোদিন আটকে ছিল বদলী, সেই বিধি লংঘন করেই তার বদলী কার্যকরী করা হয়েছে।
ধনবাড়ি উপজেলার বাজিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহিদা নাসরিন ঘাটাইলে বদলী হবার জন্য বিগত ২০২০ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। ঘাটাইলে পদ শূন্য আছে কিনা জানতে চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে আবেদনের দুইদিন পর চিঠি দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। ঘাটাইলের গুণদত্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদ শূন্য আছে বলে চিঠির জবাবে জানান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এরপর বিগত ২০২০ সালের (২১ জানুয়ারি) জাহিদা নাসরিনকে ধনবাড়ি থেকে ঘাটাইলের ওই বিদ্যালয়ে বদলীর আদেশ দেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ।
বদলীর নথিপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জেলা থেকে যে বদলীর আদেশ দেওয়া হয়েছিল তা ছিল প্রয়োজনীয় প্রতিস্থাপন সাপেক্ষে। অর্থাৎ তার শূন্যস্থান আগে পূরণ করে তারপর জাহিদা নাসরিনের বদলি কার্যকর করা যাবে। কারণ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বদলির নীতিমালা অনুযায়ী চার শিক্ষকের কোনো বিদ্যালয় থেকে প্রতিস্থাপন ব্যতীত কাউকে বদলী করা যাবে না। কিন্তু জাহিদা নাসরিনকে যখন বদলী করা হয় তখন বাজিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ছিলেন চারজন। তাকে বদলি করায় বর্তমানে সেখানে শিক্ষক আছেন মাত্র তিনজন। নীতিমালা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট উপজেলার শিক্ষা অফিসার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোনোভাবেই জাহিদা নাসরিনকে অব্যহতি পত্র (রিলিজ লেটার) দিতে পারেন না।
বাজিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান টিনিউজকে বলেন, শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে। বিদ্যালয়ে ১২০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে তিনিসহ মাত্র তিনজন শিক্ষক আছেন। তার অভিযোগ প্রতিস্থাপন না করেই রিলিজ লেটার নিয়ে ঘাটাইল চলে গেছেন।
শিক্ষক জাহিদা নাসরিনের বদলীর ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন নীতি মানা হয়েছে কি? এমন প্রশ্নের জবাবে ধনবাড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মনিরুল ইসলাম টিনিউজকে বলেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে তাকে রিলিজ লেটার দেওয়া হয়েছে।
ঘাটাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান টিনিউজকে বলেন, ধনবাড়ি শিক্ষা কর্মকর্তার দেওয়া রিলিজ লেটার হাতে পেয়েই ওই শিক্ষকে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সদ্য যোগদান করা টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ টিনিউজকে বলেন, অবশ্যই প্রতিস্থাপন নীতি লংঘন করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হবে। খতিয়ে দেখে এ কাজে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Comments are closed.