গোপালপুরে ২৭ মৃত ব্যক্তি জীবিত ॥ ১৯৬ জীবিতদের মৃত দেখানো হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার ॥
তথ্যসংগ্রকারীদের ভুলে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় ১৯৬ জন জীবিতদের মৃত দেখানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ২৭ জনকে জীবিত করা হয়েছে। তবে এমন ঘটনা বাস্তবে নয়। গোপালপুর উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে জীবিত ১৯৬ জন মানুষকে মৃত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। পরে পুণরায় হালনাগাদ করার সময় এমন ত্রুটির চিত্র উঠে এসেছে। এদিকে, এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা।
গোপালপুর নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, বিগত ২০১৭ সাল থেকে চলতি বছরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য দেড় শতাধিক মাঠকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তারা সবাই ছিলেন স্কুল শিক্ষক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেছিলেন তারা। তাদের কাজের নিয়মাবলী শিখিয়ে দেওয়া হলেও তারা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। ফলে জীবিতরা মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই চন্দ্র দাসের স্ত্রী সাবিত্রী রানী অভিযোগ করেন, গত বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় তাকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত রোববার (১৯ মার্চ) মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে দেখেন ডাটাবেজে তাকে মৃত দেখাচ্ছে। পরে নির্বাচন অফিসে গেলে সংশ্লি¬ষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জীবিত থাকার সনদপত্রসহ আবেদন করতে বলা হয়। পরে তিনি ধোপাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে পরদিন (২০ মার্চ) এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেন। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবিত্রী রানী মারা যাননি। তিনি সশরীরে ইউপি অফিসে হাজিরা হয়ে প্রমাণ করেছেন যে তিনি জীবিত রয়েছেন। অতএব তিনি বেঁচে নেই, এমন ভুয়া তথ্য সংশোধন করে তাকে হয়রানি থেকে মুক্ত করা হোক।
পৌরসভার গাংগাপাড়া গ্রামের আমান আলীর ছেলে শাফিকুল ইসলাম, জোত বিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই দাসের ছেলে দীপক দাসসহ ২৭ জনকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় স্কুল-কলেজে সন্তানের ভর্তি, বয়স্ক ভাতার টাকা উঠানো, হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা এবং ব্যাংকের সেবা থেকে ছয় মাস ধরে বঞ্চিত রয়েছেন। অনেকেই ভাতা বা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা তুলতে না পেরে হয়রানির শিকার হয়েছেন। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিশেষ ফরমে আবেদন করে মৃত তালিকা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহার করতে সক্ষম হন।
গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, মাঠকর্মীরা ভুল তথ্য সংগ্রহ করেছে। আমরা যাচাই বাছাই করে দেখি ১৯৬ জনের কম্পিউটারে ডাটা বন্ধ হয়ে আছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ২৭ জন নিজেরা এসে আমাদের জানানোর পর আমরা তাদের ডাটা সচল করে দিয়েছি। এসব ভুল মাঠ পর্যায়ের তথ্যসংগ্রহকারীরা করেছেন। এজন্য যাচাই করে তাদের ভাতা প্রদান বন্ধ করে দেয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এসব মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।