গোপালপুরে রোগি মেয়ের হাতে কথিত কবিরাজ মা’র মৃত্যু
স্টাফ রিপোর্টারঃ
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের উদ্যমবর্ণি গ্রামে মেয়ের কথিত জ্বিন-ভুতের চিকিৎসা করতে গিয়ে রোগির হাতে খুন হয়েছেন কথিত কবিরাজ মা ফিরোজা বেগম (৫০)। শুক্রবার রাতে মেয়ে শামছুন্নাহারকে(৩৫) কথিত জ্বিন-ভুতের চিকিৎসা করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। গোপালপুর থানা পুলিশ রাতেই মেয়েকে(রোগি) আটক করেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গোপালপুর উপজেলার বেলুয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী ফিরোজা বেগম দীর্ঘদিন ধরে কথিত জ্বিন-ভুত ছাড়ানোর চিকিৎসা করে ‘কবিরাজ’ নামে পরিচিতি পান। তিনি অর্থের বিনিময়ে নিয়মিত ‘জ্বিন-ভুতের’ চিকিৎসা করছিলেন। কয়েকদিন আগে ফিরোজা বেগমের মেয়ে তিন সন্তানের জননী শামছুন্নাহার অসুস্থ হয়ে ‘পাগলামী’ করতে থাকে। মেয়ের উপর জ্বিন-ভূতের ‘আছর’ হয়েছে বলে খবর পান কবিরাজ মা ফিরোজা বেগম। কথিত জ্বিন-ভুতের আছরের শিকার মেয়ে শামছুন্নাহারের চিকিৎসা করতে কবিরাজ মা ফিরোজা শুক্রবার বিকেলে উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের উদ্যমবর্ণি গ্রামে মেয়ের বাড়িতে যান। ওইদিন রাতে দু’জনে (রোগি-কবিরাজ) কাছাকাছি বসে নানা ধরণের মন্ত্র পড়তে থাকে কবিরাজ মা ফিরোজা বেগম। কিছুক্ষণ পর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে মেয়ে শামছুন্নাহার। বেশ কিছু সময় মা-মেয়ের মধ্যে চুলোচুলি হয়। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত লোকজন ভয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এ সময় মেয়ে শামছুন্নাহার আরো ক্ষিপ্ত হয়ে কবিরাজ মা ফিরোজা বেগমের মুখ, নাক, কান কামড়িয়ে ছিঁড়ে ফেলে। এক পর্যায়ে শামছুন্নাহার কবিরাজ মায়ের গলা টিপে ধরে। রোগি মেয়ে শামছুন্নাহার কবিরাজ মা ফিরোজা বেগমের গলা টিপে ধরায় কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে রাতেই গোপালপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মেয়ে শামছুন্নাহারকে আটক ও মায়ের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) জহিরুল ইসলাম জানান, ঘাতক মেয়েটিকে আটক করা হয়েছে। শনিবার সকালে কবিরাজ মা ফিরোজা বেগমের লাশ ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।