কালের আবর্তে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি
অন্তু দাস হৃদয়ঃ
ও বউ ধান বানে রে ঢেঁকিতে পা দিয়া, ঢেঁকি নাচে বউ নাচে হেলিয়া দুলিয়া, ও বউ ধান বানে রে-গ্রামীণ এই ঐতিহ্যবাহী লোকজ গানটি আর তেমন শোনা যায় না। চোখে পড়ে না আর ঢেঁকিতে পাড় দিতে, গ্রামীণ বউদের এই গান গাওয়ার দৃশ্য। কালের আবর্তে গ্রাম-বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি আজ বিলুপ্তির পথে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন ঢেঁকির কদর গ্রাম-বাংলার কৃষকদের বাড়ি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। হাতে গোনা কিছু কৃষকদের বাড়িতে এই ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি এখনও চোখে পড়ে।
বর্তমান সময়ে মানুষ ধান, চালের আঁটা ও চিড়া ভাঙানোর জন্য বৈদ্যুতিক মিলের ওপর নির্ভর করছেন। কেননা কম সময়ে ও কম খরচে তারা কাজ স¤পন্ন করতে পারছেন। তাই কৃষকরা ঢেঁকির উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দিচ্ছেন।
ঢেঁকি নিয়ে অনেক কবি, সাহিত্যিকরা যুগে যুগে অনেক কবিতাও লিখেছেন। তাই ঢেঁকির গুণ স¤পর্কে প্রবাদ বাক্য রচনা করেছেন গুণিজনেরা যে, ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান বানে। বর্তমানে গ্রামের দু’একটি কৃষকদের বাড়িতে হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি দেখা যায়। আর কিছুদিন পরে গ্রামের কৃষকদের বাড়িতে ঢেঁকি আর দেখা যাবে না বলে আশঙ্কা অনেকেরই।
কালের আবর্তে হারিয়ে যাবে গ্রাম-বাংলার শত বছরের এই ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। এমন এক সময় আসবে যখন আগামী প্রজন্মের কাছে এই ঢেঁকি শুধুই কাল্পনিক জগতের এক কল্পকাহিনীর গল্প হিসেবে পরিচিতি হিসেবে ঠাঁই পাবে বলে অনেকের ধারণা।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা গ্রামের রেহেনা বেগম (৪৮) বলেন, তিনি এখনও এই ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি ধরে রেখেছেন। প্রায় ১২ বছর যাবত এই ঢেঁকিতে ধান, আটা ও চিড়া ভেঙে আসছেন। এলাকার বিভিন্ন লোকেরা আটা ভেঙে নেয়ার জন্য তার কাছে আসে। তবে বৈদ্যুতিক মিল হওয়াতে লোকেরা আর আগের মতো তার কাছে আসে না।