অনেক নারীকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন টাঙ্গাইলের ফরিদা
জে সাহা জয়ঃ
সরকারী চাকুরিজিবী বাবা চেয়েছিলেন মেয়ে বড় হয়ে একটি চাকুরি করবেন। কিন্তু মেয়ে চেয়েছিল নিজ উদ্যোগে কিছু করার। যেখানে নিজে সাবলম্বি হওয়ার পাশাপাশি অন্যজনের জন্যও করবে কর্মসংস্থান। বলা হচ্ছে টাঙ্গাইলের ফরিদা পারভিন লোটাসের কথা। যে নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন ফারজিন হ্যান্ডিক্রাফ্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠান। নিজে সাবলম্বি হওয়ার পাশাপাশি সমাজের আরো অনেক নারীকে দিয়েছেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। কিন্তু মুলধনের অভাবে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। ছোট বেলা থেকেই কুটির শিল্পের দিকে ঝোঁক ছিল ফরিদা পারভিনের। আর এই আগ্রহটা গড়ে উঠেছিল তার মায়ের হাতের কাজ দেখে। বছর পাঁচেক আগে পাশের বাড়ির এক মহিলার পুঁতি দিয়ে ব্যাগ তৈরি করতে দেখে আগ্রহ জাগে তার মাঝে।পরিবারের কাছে আগ্রহের কথা জানালে তাকে দুইশত টাকার পুঁতি এনে দেয়। ব্যাগ তৈরীতে তার ডিজাইন দেখে আশে পাশের অনেকেই এরকম ব্যাগ তৈরি করে দিতে বলে। ফরিদা পারভিন তাদের কাছ থেকে ওয়ার্ডার নিয়ে তৈরী করতে থাকে ব্যাগ গুলো। চাহিদা বাড়তে থাকায় আশে পাশের বেশ কয়েক জন মেয়েকে সে ট্রেনিং দিয়ে তাদের দিয়ে উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।
এভাবে বর্তমানে তার সাথে কাজ করে প্রায় ত্রিশ জন নারী কর্মী। পরে সে যুব উন্নয়নের ট্রেনিং নিয়ে ব্লক বাটিক, সেলোয়ার কামিজ তৈরীসহ উৎপাদন করে নানা রকম হস্তশিল্প সামগ্রী। এসকল সামগ্রী দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রির পাশা পাশি দেশের বাইরের সৌদি আরব, মালয়শিয়ায় তার তৈরি পন্য রপ্তানির চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আর এখানে কাজ করে অনেক নারী পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা রেখেছেন সচল। এ কাজের স্বীকৃত স্বরুপ গত বছর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে।
ব্যবসা সম্প্রসারণ করার মত পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় পরেছেন সমস্যায়। স্থানীয় এনজিও থেকে নিয়েছেন বেশ কিছু টাকা। কিন্তু এনজিও গুলোর সুদ বেশী নেয়ায় লাভ করা যাচ্ছেনা তাই ফরিদা পারভিন টিনিউজবিডি.কমকে বলেন যদি সরকার নতুন উদ্যোক্তাদের সল্প সুদে টাকা দেয় তবে একদিন কুটির শিল্পের মাধ্যমে তারা অনেক দূর যেতে পারবেন।
জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াছমিন টিনিউজবিডি.কমকে জানান, ফরিদা পারভিনের ব্যবসা শুরুর জন্য আমরা তাকে প্রাথমিক ভাবে কিছু টাকা লোন হিসেবে দিয়েছিলাম। সে টাকা পরিশোধ হচ্ছে। আর তার এই উদ্যোগকে বৃহৎ পরিষরে বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় মহিলা সংস্থা সব ধরনের ব্যবস্থা করবে।
অপরদিকে, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা টিনিউজবিডি.কমকে বলেন, অচিরেই তার জন্য মহিলা অধিদপ্তরের যে সহজ শর্তে হৃন আছে সে হৃনের ব্যবস্থা করা হবে এবং এসইমি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়ে তার ব্যবসা সম্প্রসারণের সহযোগীতা করা হবে।
একজন ফরিদা পারভিনের মত আরো অনেকেই নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন কুটির শিল্প স্থাপন করে নিজে স্বাবলম্বি হওয়ার পাশাপাশি আরো অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবে। এমনটাই আশা করে স্থানীয়রা।