জাহিদ হাসান ॥
দরপত্র আহবান ছাড়াই টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়কের দুই পাশের প্রায় শতাধিক গাছ বিক্রি করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ওয়ার্ক এ্যাসিসট্যান্ট আব্দুর রহমানের যোগসাজশে প্রায় ৪০ বছরের এসব পুরাতন গাছ বিক্রি করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় টাঙ্গাইল সড়ক বিভাগ থানায় সাধারণ ডায়রি ও তদন্ত কমিটি গঠণ করেছে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার বাজিতপুর থেকে দেলদুয়ার উপজেলা মোড় পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রাস্তার প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন কাজ করা হবে। সড়ক বিভাগ এই কাজের জন্য দরপত্র আহবান করেছে। কিছু দিনের মধ্যে কার্যাদেশও দেয়া হবে। এ কারণে সড়কের দুই পাশে প্রায় ৪০ বছরের পুরানো আম, জাম, মেহগনি, কড়ই ও শিমুল গাছ দরপত্র আহবান করে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। সড়ক ও বন বিভাগের তত্বাবধানে গাছের চিহ্নও করা হয়েছে। কিন্তু দরপত্র আহবান না করেই টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে ওয়ার্ক এ্যাসিসট্যান্ট আব্দুর রহমান দরপত্রের কথা বলে প্রায় শতাধিক শিমুল, আম ও মেহগনি ও কড়ই গাছ বিক্রি করে দিয়েছে।
সরেজমিন দেলদুয়ার সড়কের রুপসী গিয়ে দেখা যায়, করাতিরা গাছ কেটে খন্ড খন্ড করে ট্রাকে গাছ বোঝাই করছে। আব্দুল মোমেন নামের এক করাতি বলেন, আব্দুল আজিজ নামের এক মহাজন ওয়ার্ক এ্যাসিসট্যান্ট আব্দুর রহমানের কাছ থেকে ১২টি শিমুল গাছ কিনেছেন। তারা দৈনিক ভিত্তিতে গাছ কেটে দেচ্ছে বলে জানান। রুপসী গ্রামের আব্দুর হালিম টিনিউজকে বলেন, আমাদের বাড়ির সাথে গাছ লাগিয়েছিলাম। রাস্তা উন্নয়নের কথা বলে সড়ক বিভাগের লোক এসে গাছ কেটে বিক্রি করে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান বিদ্যুৎ টিনিউজকে বলেন, কোন দরপত্র ছাড়াই ওয়ার্ক এ্যাসিসট্যান্ট আব্দুর রহমান অবৈধভাবে গাছ বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
দেলদুয়ার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের বাবলু টিনিউজকে বলেন, ওয়ার্ক এ্যাসিসট্যান্ট আব্দুর রহমানের তত্বাবধানে গাছ কেটে নেয়া হচ্ছে। দরপত্র আহবান করা হয়েছে এমনটা আমার জানা নেই।
তবে এ ব্যাপারে ওয়ার্ক সড়ক বিভাগের এ্যাসিসট্যান্ট আব্দুর রহমান টিনিউজকে বলেন, সড়ক প্রশস্তকরণ কাজে আমরা গাছে নম্বর দেই। কে বা কারা গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আর আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে সড়ক বিভাগের উপসহকারি প্রকৌশলী মুস্তাফিজুর রহমান টিনিউজকে বলেন, টাঙ্গাইল-দেলদুয়ার সড়কের উন্নয়নের জন্য দুইপাশের গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দ্রুতই দরপত্র আহবান করা হবে। দরপত্রের আগেই গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি আমাদের জানা নাই।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমিমুল এহসান টিনিউজকে বলেন, গাছ কাটা ও বিক্রির বিষয়ে সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠণ ও থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সড়ক বিভাগের বিরুদ্ধে দরপত্র ছাড়াই শতাধিক গাছ বিক্রি ও কাটার অভিযোগ

মন্তব্য করুন